নিজস্ব প্রতিবেদক:
বড় অংকের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্য নিয়ে আজ (বুধবার) শুরু হচ্ছে সপ্তাহব্যাপী জাতীয় আয়কর মেলা। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্মাণাধীন এনবিআর ভবনে সাত দিন ধরে চলবে এ মেলা। সকাল ১০টায় শুরু হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এতে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান প্রধান অতিথি ও এফবিসিআইর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান সভাপতিত্ব করবেন।
আট বিভাগীয় শহর, ৫৬ জেলা ও ১০৩টি উপজেলাসহ সারা দেশে ১৬৭টি জায়গায় হবে আয়কর মেলা। ১০৩ উপজেলার মধ্যে ৩২ উপজেলায় দুই দিন ও ৭১ উপজেলায় এক দিন (ভ্রাম্যমাণ) এ মেলা হওয়ার কথা রয়েছে।
৫ লাখ নতুন করদাতা সংগ্রহের লক্ষ্য নিয়ে এবারের আয়কর মেলার আয়োজন করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সারা দেশে মেলায় ১৫ লাখ করদাতাকে সেবা দেবে সংস্থাটি। অন্যান্যবারের মতো মেলায় করদাতাদের সব ধরনের তথ্যসেবা দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন, বর্তমানে চলমান রাজস্ব সংস্কৃতি আরো সুসংহত হবে। গত অর্থবছরে যেভাবে ই-টিআইএনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, তাতে এবার আমরা বেশি আয়কর রিটার্ন আশা করছি। এটা দিন দিন বাড়বে। এতে আমাদের তরুণ সমাজ আরো এগিয়ে আসবে। যারা করজালের বাইরে আছেন তারাও এগিয়ে আসবেন।
এনবিআরের তথ্য অনুসারে, ট্যাক্স কার্ড দিতে এরই মধ্যে ১৪১ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে মনোনীত করেছে এনবিআরের ট্যাক্স কার্ড নির্ধারণী কমিটি। ৩৫টি ক্যাটাগরিতে এ ট্যাক্স কার্ড দেওয়া হবে এবার। ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের মধ্যে বিশেষ শ্রেণিতে জ্যেষ্ঠ নাগরিক, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী, নারী ও তরুণ করদাতাদের আলাদা ক্যাটাগরি নির্ধারণ করা হয়েছে। আবার আয় ও ব্যবসার ভিত্তিতে বেতনভোগী, ডাক্তার, সাংবাদিক, আইনজীবী, প্রকৌশলী, স্থপতি, হিসাববিদ, নতুন করদাতা, খেলোয়াড়, অভিনেতা, গায়ক, সাধারণ ব্যবসায়ী ও অন্যান্যসহ ৭৬টি ট্যাক্স কার্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ১৪টি খাতের প্রত্যেকটি পৃথক ট্যাক্স কার্ডসহ অন্যান্য খাত মিলে ৫৭টি প্রতিষ্ঠানকে ট্যাক্স কার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর বাইরে বিভিন্ন এনজিও, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মধ্যে আটটি পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ট্যাক্স কার্ডের জন্য করদাতাদের তালিকা প্রায় চূড়ান্ত।
২০১০ সালে প্রথম আয়কর মেলা শুরু হয়। সর্বশেষ ২০১৬ সালে আয়কর মেলায় সেবা নিয়েছেন ৯ লাখ ২৯ হাজার ব্যক্তি, যা তার আগের বছরের চেয়ে ১ লাখ ৭২ হাজার বেশি। এর মধ্যে ১ লাখ ৯৪ হাজার করদাতা রিটার্ন জমা দেওয়ার বিপরীতে ২ হাজার ১৩০ কোটি টাকা আয়কর দিয়েছেন। নতুন ই-টিআইএন নেওয়ার মাধ্যমে করের খাতায় নাম লিখিয়েছেন ৩৬ হাজার ৮৫৩ জন।
২০১৫ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ৩০ সেপ্টেম্বর আয়কর দেওয়ার শেষ দিন থাকলেও বিভিন্ন কারণে সময়সীমা বাড়ানো হতো। গত বছর থেকে ৩০ নভেম্বরকে আয়কর দিবস হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ওই দিনই আয়কর দেওয়ার শেষ দিন। এর পর আয়কর দিতে চাইলে জরিমানা গুনতে হচ্ছে।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ