নিজস্ব প্রতিবেদক:
‘আমার লাগান মাইনসে কি ভাতা পায়না? বাবারে আর কত কইতাম, আমার পোড়া কপালে না জানি আর কত কষ্ট আছে। আপনেরা ফডো দিয়া লেখলে সরকারে আমারে যদি একটা কার্ড দেয়। ভিক্ষা আর কত করাম, জানডা আর চলেনা।’ প্রায় শতবর্ষী লেকজান বিবি ভোটার আইডি কার্ড তুলে ধরে এভাবেই আকুতি জানাচ্ছিলেন। ময়মনসিংহের নান্দাইল পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড নলুয়াপাড়ার ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবনধারন করা এই বৃদ্ধা বাজারে ভিক্ষা করতে করতে এসব কথা জানান।
প্রায় ৫০ বছর আগে স্বামী আব্দুল রহমান ভানুয়া মারা গেছেন। নিজের দুই ছেলে সন্তান থাকলেও তারাই অভাব-অনটনে চলতে পারে না। একমাত্র মেয়েটির বিয়ে হয়েছে পূর্বধলা উপজেলার জারিয়া-ঝাঞ্জাইল এলাকায়। তার স্বামীও ভূমিহীন, নিজেরাই কষ্টে দিন যাপন করে। বর্তমানে তিন সন্তানই তার কোন খোঁজ খবর নেয়না। সারাদিন ভিক্ষা করে যা পায় তা দিয়ে একবেলা রান্না করে খায়। শরীর ভালো না থাকলে বা সাহায্য না পেলে এই বয়সেও না খেয়ে দিন কাটাতে হয় তাকে।
পৌর এলাকার নলুয়াপাড়ায় তার স্বামীর রেখে যাওয়া দুই শতক জমির ওপর সন্তানদের পাশাপাশি এক কোণায় একটি ভাঙা কুঁড়ে ঘরে বসবাস করেন তিনি। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া লেকজান বেওয়ার ভাগ্যে আজও জোটেনি একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড। স্থানীয়জন প্রতিনিধির কাছ থেকেও পাননি কোনো সাহায্য। একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড লেকজান বিবির কাছে এখন যেন সোনার হরিণ।
এ ব্যাপারে নান্দাইল পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সফিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি ওই ভিক্ষুককে চেনেন না বলে জানান। তিনি বলেন, ওই পরিবারের কেউ যোগাযোগ করলে তিনি কার্ড দেয়ার চেষ্টা করবেন বলে জানান।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ