আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বরখাস্ত হওয়া কাতালান সরকার ও ভেঙে দেওয়া কাতালান পার্লামেন্টের নেতাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্পেনের অ্যাটর্নি জেনারেল।
কাতালান সরকার পার্লামেন্টে একতরফাভাবে কাতালোনিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণা করার কয়েকদিন পর, কেন্দ্রীয় সরকারের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা একথা জানালেন।
সংক্ষিপ্ত এক বিবৃতিতে হোসে মানুয়েল মাজা বলেন, তাদের অসাংবিধানিক তৎপরতার কারণে প্রাতিষ্ঠানিক কিছু সঙ্কটের তৈরি হয়েছে। মাদ্রিদ আজ থেকে কাতালানের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ নিতে শুরু করেছে।
স্পেনের কেন্দ্রীয় সরকার এখন স্পষ্টতই কাতালোনিয়ার নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে তুলে নিচ্ছে। কাতালান প্রেসিডেন্ট কার্লেস পুঁজদেমন এখন কার্যত নামেই তার পদে আছেন। স্পেনের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী সোরায়া সেয়াঞ্জ দে সান্তামারিয়া দায়িত্ব নিয়েছেন।
পুঁজদেমন এবং তার সরকার এখন বরখাস্ত। তা হলেও তারা বলছেন কিছুই পরিবর্তন হয় নি এবং তারা কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মকাণ্ডকে অভ্যুত্থান বলে আখ্যায়িত করছেন। বরখাস্ত হওয়া কাতালান মন্ত্রীরা কতজন অফিস করতে আসবেন তাও স্পষ্ট নয়।
কাতালোনিয়ার স্বাধীনতাপন্থী রিপাবলিকান বামপন্থী একজন নেতা এবং ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের এমপি এ্যালফ্রেড বশ বলেন, আমি মনে করি পুঁজদেমন অফিসে আসবেন। আমি নিশ্চিত যে কাতালোনিয়া প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট পুজদেমন কাজে আসবেন। কারণ এটাই তার কাজ । তাকে সরাসরি কাতালান পার্লামেন্ট নির্বাচিত করেছে, যা গণতান্ত্রিক নির্বাচনের ফল। তাকে এ দেশের নেতৃত্ব দেয়া হয়েছে। তাকে এটা করতে হবে, তিনি সে দায়িত্ব ত্যাগ করতে পারেন না।
এমন খবরও পাওয়া যাচ্ছে যে মি পুঁজদেমনকে হয়তো আটক করা হতে পারে। কাতালানের স্থানীয় পুলিশ ইতিমধ্যেই কেন্ত্রীয় সরকারের নির্দেশ মেনে পুলিশ স্টেশনগুলো থেকে তার ছবি সরিয়ে ফেলেছে।
পুঁজদেমন সপ্তাহ শেষে তার নিজ শহর জিরোনাতে ছিলেন কবে তিনি কবে বার্সেলোনায় আসবেন তা অবশ্য জানা যাচ্ছে না।
কাতালান স্বাধীনতার বিরোধী সোশালিস্ট সিভিল কাতালানের নেতা হুয়ান আরজা বলেন, স্বাধীন কাতালোনিয়ার কার্যত কোন অস্তিত্ব নেই। এখানে সবাই কাজ করছে, সবকিছু স্বাভাবিক। আমার মনে হয় জাতীয়তাবাদীদের এখন ভাবতে হবে যে তারা ভবিষ্যতে কি করবে। কারণ সামনে নতুন নির্বাচন আসছে। কাতালান প্রজাতন্ত্রের অস্তিত্ত্ব এখন শুধু জাতীয়তাবাদীদের কল্পনায়। দুনিয়ার বাকি লোকেদের কাছে এর কোন অস্তিত্ত্ব নেই।
স্পেনের সরকার জানে যে, খুব বেশি জবরদস্তি করে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হলে হিতে বিপরীত হতে পারে এবং তাতে বিচ্ছিন্নতাবাদীরাই লাভবান হতে পারে। তবে বোঝা যাচ্ছে যে স্পেনের কেন্দ্রীয় সরকার কাতালানে তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ