নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকাস্থ সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তা খালাফ আল আলী হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানির ৩১ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন আদালত। মঙ্গলবার ভারপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের দ্বিতীয় বেঞ্চ আসামিপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ দিন ধার্য করা হয়। আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সাইফুল ইসলামের পক্ষে সময় আবেদন করেন প্রাক্তন বিচারপতি শিকদার মকবুল হক।
এর আগে ১০ অক্টোবর এই মামলায় রায় ঘোষণার দিন ধার্য থাকলেও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সাইফুল ইসলামের পক্ষে আইনজীবী নিয়োগের আবেদন করা হয়। পরে আদালত আবেদন মঞ্জুর করে আপিলের ফের শুনানির জন্য দিন রাখেন।
খালাফ হত্যা মামলায় গত ৯ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের শুনানি শুরু হয়। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের দুই নম্বর বেঞ্চ রায়ের জন্য ১০ অক্টোবর দিন ধার্য করেন। সেই মোতাবেক আজ মামলাটি রায়ের জন্য কার্যতালিকায় উঠে আসে।
এ মামলায় আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।
২০১২ সালের ৫ মার্চ রাত ১টার দিকে রাজধানীর গুলশান কূটনৈতিক এলাকার ১২০ নম্বর সড়কের ১৯/বি নম্বর বাসার সামনে গুলিবিদ্ধ হন খালাফ আল আলী (৪৫)। গত ৬ মার্চ ভোরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এর কিছুদিন পর ওই বছরের ৪ জুন দক্ষিণখান থানার গাওয়াইর এলাকা থেকে সাইফুল ইসলাম মামুন, আকবর আলী লালু ওরফে রনি ও আল আমিন নামে ৩ জনকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে কালো রঙের একটি বিদেশি .২২ বোরের রিভলবার জব্দ করা হয়। অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে ওইদিনই তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা দায়ের করা হয়।
আসামি মামুন ও আল আমিন আদালতে স্বীকার করেন যে, ২০১২ সালের ৫ মার্চ রাতে ছিনতাই করতে বাধা দেয়ায় তারা খালাফ আল আলীকে এ অস্ত্র দিয়ে গুলি করে হত্যা করেন। পরে আসামি মামুন, মো. আল আমীন, আকবর আলী লালু ওরফে রনি ও রফিকুল ইসলাম খোকনকে খালাফ হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখায় (শ্যো’নঅ্যারেস্ট) পুলিশ।
২০১২ সালের ৩১ অক্টোবর ওই ৪ জনসহ পলাতক সেলিম চৌধুরী ওরফে সেলিম আহমেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করে এ মামলার বিচার শুরু করেন ঢাকার ৪ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মোতাহার হোসেন। একই বছরের ৩০ ডিসেম্বর খালাফ আল আলীকে হত্যার দায়ে ৫ আসামির সবাইকে ফাঁসির আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিলের শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর আসামি সাইফুলকে বিচারিক আদালতের দেয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন হাইকোর্ট। মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত অন্য ৩ জনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং পলাতক একজনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
আল আমীন, আকবর আলী লালু ওরফে রনি ও রফিকুল ইসলাম খোকনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং পলাতক সেলিম চৌধুরী ওরফে সেলিম আহমেদকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ