নিজস্ব প্রতিবেদক:
পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও মা স্বপ্না রহমান হত্যা মামলায় মেয়ে ঐশী রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে। রবিবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ ৭৮ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশ করেন।
গত ৫ জুন ঐশীর ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন), আপিল ও জেল আপিলের শুনানি শেষে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ঐশী রহমানের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারদণ্ড দেন হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ। গত ৭ মে ঐশীর ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন), আপিল ও জেল আপিলের শুনানি শেষ হয়।
এর আগে, গত ১০ এপ্রিল মানসিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে ঐশীকে হাইকোর্টে হাজির করা হয়। সেদিন খাস কামরায় দুই পক্ষের আইনজীবীর উপস্থিতিতে তার সঙ্গে কথা বলেন বিচারকরা। এরও আগে ১২ মার্চ ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শুরু হয়।
২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগের বাসা থেকে পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন মাহফুজুর রহমানের ছোট ভাই মশিউর রহমান রুবেল পল্টন থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার দিন বিকেলে পল্টন থানায় আত্মসমর্পণ করেন ওই দম্পতির মেয়ে ঐশী রহমান।
২০১৪ সালের ৯ মার্চ ঐশীকে প্রধান আসামি করে তিনজনের বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক আবুল খায়ের। এ মামলায় ৩৭ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।
২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদ পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানকে হত্যার দায়ে তাদের মেয়ে ঐশী রহমানকে দুবার মৃত্যুদণ্ড দেন। রায়ে প্রত্যেক মৃত্যুদণ্ডের সঙ্গে ২০ হাজার টাকা করে মোট ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে দুই বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়। তবে একটি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার পর অন্যটি সরাসরি বাতিল হয়ে যাবে।
একইসঙ্গে ঐশীর বন্ধু মিজানুর রহমান রনিকে দুই বছর কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। মামলার অপর আসামি আসাদুজ্জামান জনিকে খালাস দেয় আদালত। রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ৬ ডিসেম্বর হাইকোর্টে ঐশীর আইনজীবী আপিল আবেদন করেন।
এর আগে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হিসেবেও মামলাটি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। ওই দিন ৬ ডিসেম্বর ২৫টি যুক্তি দেখিয়ে ঐশী রহমান হাইকোর্টে আপিল করেন। আপিলে তিনি বলেছেন, তার বিচার প্রক্রিয়া ছিল ভুলে ভরা। মিথ্যা সাক্ষীর ওপর ভিত্তি করে তাকে সাজা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া বয়সের ক্ষেত্রে মামলার বাদীর বক্তব্য গ্রহণ করেনি আদালত।
দৈনিক দেশজনতা /এনএইচ
Daily Deshjanata দেশ ও জনতার বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর

