২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১২:১৯

সমঝোতার চেষ্টায় অ্যাকর্ড চূড়ান্ত বৈঠক আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

দেশে অতিরিক্ত সময় নিজেদের কার্যক্রম চালিয়ে নিতে সমঝোতার চেষ্টায় পোশাক খাতে সংস্কার বিষয়ক ইউরোপের ক্রেতাদের জোট অ্যাকর্ড। এ লক্ষ্যে তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সঙ্গে বৈঠকের পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে জোটটি।

আজ বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অ্যাকর্ডের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকেই অ্যাকর্ড থাকা না থাকার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা রয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে বিকাল ৪টায় অ্যাকর্ড প্রতিনিধিদলের একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত আলোচনা সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

সভায় বিজিএমইএ’র সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে বিজিএমইএ’র একটি প্রতিনিধিদলও উক্ত আলোচনা সভায় উপস্থিত থাকবেন। যদিও সরকার এবং বিজিএমইএ কোনো পক্ষই দ্বিতীয় মেয়াদে অ্যাকর্ডকে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে দেওয়ার পক্ষে নয়।

এর আগে গত সোমবার বিজিএমইএ’র সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে যোগ দিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন অ্যাকর্ড অন ফায়ার অ্যান্ড বিল্ডিং সেফটি ইন বাংলাদেশের (অ্যাকর্ড) ১৫ সদস্যের পরিচালনা কমিটি।

বতর্মান মেয়াদ শেষ হওয়ার পরই দ্বিতীয় মেয়াদে ঠিক আগের মতোই স্বাধীনভাবে সংস্কার কাজ চালিয়ে যেতে চায় অ্যাকর্ড। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে রানা প্লাজা ধসের পর একই বছরের ১৫ মে ইউরোপের ২০টি দেশসহ উত্তর আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার ২০০ ব্র্যান্ড ও খুচরা ক্রেতা এবং ট্রেড ইউনিয়নের সমন্বয়ে অ্যাকর্ড গঠিত হয়।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সরকারের পক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অ্যাকর্ডের বৈঠকে অতিরিক্ত সময় থাকা না থাকার বিষয়টিই মুখ্য আলোচ্য বিষয়। সরকারের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত মেয়াদ না বাড়ানোর কথা বলা হবে। বিভিন্ন সময়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এবং শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, অ্যাকর্ডকে অতিরিক্ত সময় কাজ করতে দেয়া হবে না।

অ্যাকর্ডের পক্ষে দ্বিতীয় মেয়াদের সিদ্ধান্ত জানার পরই এক প্রতিক্রিয়ায় বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, এ দেশে নতুন করে কাজ করতে হলে সরকারের সঙ্গে তাদের নতুন করে চুক্তি করতে হবে। এ বিষয়ে এখনও তাদের সঙ্গে সরকারের কোনো আলোচনা হয়নি। আগামী বছরের মে মাসে তাদের মেয়াদ শেষ হবে। এর আগে এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না।

গত সোমবারের সভা শেষে বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান জানান, মেয়াদ শেষ হলে অ্যাকর্ডকে চলে যেতে হবে। যদি তারা থাকতে চায় তবে নতুন করে আলোচনা করতে হবে। শুধু তাই নয়, সংগঠনটির চলমান কার্যক্রমেও সংস্কার চেয়েছে বিজিএমইএ। বিজিএমইএ’র কারওয়ান বাজার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে আরও বেশ কিছু দাবি করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, বিজিএমইএ’র সঙ্গে বৈঠকে বেশ কয়েকটি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, সংস্কার কার্যক্রমে অ্যাকর্ডের নির্দেশনা অনুসারে কাজ করতে ব্যর্থ কারখানা তালিকা থেকে বাতিলের বিষয়ে কঠিন না হওয়া। এ ক্ষেত্রে বলা হয়, একই গ্রুপের ৮টি কারখানা যদি অ্যাকর্ডের তালিকায় খাকে, এর মধ্যে একটি কারখানা অ্যাকর্ডের প্রেসক্রিপশন মানতে ব্যর্থ হলে তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে অ্যাকর্ড। এতে ওই গ্রুপের বাকি কারখানাগুলো বেকায়দায় পড়ে। পণ্য রফতানিতে সমস্যা হয়।

এ ছাড়া প্রাথমিকভাবে যেসব কারখানা অ্যাকর্ডের সংস্কার পরিকল্পনা (ডেপ) শর্ত পূরণ করতে পেরেছে, তাদেরকে সংস্কার সনদ দিয়ে দিতে হবে।
বিজিএমইএর এ সব প্রস্তাবে রাজি হয়ে পরবর্তীতে বাস্তবায়নে রাজি হয়েছে অ্যাকর্ড। পরবর্তীতে কার্যক্রম পরিচালনায় তারা বিজিএমইএর মনিটরিং কমিটির সঙ্গে কাজ করবে বলে জানায়।

বতর্মান মেয়াদ শেষ হওয়ার পরই দ্বিতীয় মেয়াদে ঠিক আগের মতোই স্বাধীনভাবে সংস্কার কাজ চালিয়ে যেতে চায় অ্যাকর্ড। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে রানা প্লাজা ধসের পর একই বছরের ১৫ মে ইউরোপের ২০টি দেশসহ উত্তর আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার ২০০ ব্র্যান্ড ও খুচরা ক্রেতা এবং ট্রেড ইউনিয়নের সমন্বয়ে অ্যাকর্ড গঠিত হয়।

জানা গেছে, দেশের তৈরি পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ মূল্যায়নে গত চার বছর ধরে পরিদর্শন কর্মসূচিতে নিয়োজিত আছে ইউরোপভিত্তিক ক্রেতা ও শ্রমিক সংগঠনের এই জোট। ২০১৮ সালের জুন মাসে জোটটির কর্মসূচির পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। সম্প্রতি এক বছর বাকি থাকতেই মেয়াদ আরো তিন বছর বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে জোটটি। তবে জোটটির এ সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন উচ্চ আদালত।

দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :অক্টোবর ১৯, ২০১৭ ১০:৫০ পূর্বাহ্ণ