আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইনে গেলো ২৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ২৮৮টি রোহিঙ্গা গ্রামে আগুন দেওয়ার প্রমাণ পেয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। মানবাধিকার সংস্থাটি বলছে, আগুন দেওয়া গ্রামগুলো আংশিক বা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। নতুন করে স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবিতে জাতিগত নিধনযজ্ঞের এই ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। মঙ্গলবার সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
ছবি প্রকাশ করে এইচআরডব্লিউ জানায়, উত্তর রাখাইনের হাজারো স্থাপনা আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এগুলোর বেশিরভাগই সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি। ছবিগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর কথিত ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’ শুরুর পর থেকে এই ধ্বংসযজ্ঞ চলেছে। এ প্রসঙ্গে এইচআরডব্লিউ’র ডেপুটি এশিয়া ডিরেক্টর ফিল রবার্টসন বলেন, মাত্র চার সপ্তাহে পাঁচ লাখের ওপর রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়ার কারণ কী তা স্যাটেলাইটে তোলা সর্বশেষ ছবিগুলো থেকে স্পষ্ট। শত শত গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি বর্মী সেনাবাহিনী হত্যা, ধর্ষণের মত মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছে।
রোহিঙ্গাদের গ্রামের পাশেই বৌদ্ধদের গ্রাম রয়েছে এমন বেশ কিছু এলাকাও ছবিতে চিহ্নিত করা হয়েছে যেখানে শুধুমাত্র রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলোতেই আগুন দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সাং সু চি গত ১৮ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে ভাষণে বলেন, ৫ সেপ্টেম্বরের পর রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযান চালানো হয়নি। সু চি’র বক্তব্যকে বানোয়াট প্রমাণ করেছে স্যাটেলাইটের এসব ছবি। এইচআরডব্লিউ বলছে, এমন অন্তত ৬৬টি গ্রামের তথ্য তাদের হাতে রয়েছে যেগুলোতে ৫ সেপ্টেম্বরের পর আগুন দেওয়া হয়।
উত্তর রাখাইনের মংডু, রাথেডং, বুথিডং ও এর আশপাশে মোট ৮৬৬টি গ্রামের ওপর নজর রেখেছিল এইচআরডব্লিউ। গ্রামগুলোর তথ্য বিশ্লেষণ করে তারা দেখেছে, সবচেয়ে বেশি ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে মংডু এলাকার গ্রামগুলোতে। এখানে ৬২ শতাংশ গ্রামীণ জনপদ হয় আংশিকভাবে অথবা পুরোপুরিভাবে ধ্বংস করা হয়েছে যার ৯০ শতাংশই হয়েছে ২৫ আগস্ট থেকে ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। একই সময়ে বিভিন্ন এলাকায় আগুন দেওয়া হয়েছে এমনও দেখা গেছে স্যাটেলাইটের ছবিতে। দীর্ঘ সময় ধরে আগুন জ্বললেও তা নেভানোর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি