নিজস্ব প্রতিবেদক:
নির্বাচন আয়োজন নিয়ে রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের সঙ্গে সংলাপের অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশন জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির সঙ্গে সংলাপে বসেছে। রোববার এ বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির প্রশংসা করেন। সিইসি বলেন, ক্ষমতায় থাকার সময় বিএনপি ভালো ভালো কাজ করেছে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকাকালে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত বিএনপির সঙ্গে মতবিনিময়সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারসহ ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিবও উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে ১৬ সিনিয়র নেতা মতবিনিময়সভায় অংশ নেন। সিইসি আরও বলেন, বিএনপির সংলাপের দিকে জাতি তাকিয়ে আছে। দলটি অনেক বছর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিল। তাদের দেশ পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তারা ক্ষমতায় থাকার সময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা গঠন এবং পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত বাধ্যতামূলক অবৈতনিক শিক্ষা চালু করে। এ ছাড়া বিএনপি দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন করে।
নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে বিএনপির পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রস্তাব দেয়া হয়। এর মধ্যে ছিল- সাত দিন আগে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়েন, সংসদ ভেঙে দেয়া, বিতর্কিত ইভিএম পদ্ধতি না রাখা, ২০০৮ সালের আগে সীমানা নির্ধারণ আইন কার্যকর করাসহ ১৬টি প্রস্তাব তুলে ধরে বিএনপি। নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার প্রসঙ্গটি নিয়েও কথা বলে বিএনপি। তবে দলটি এ নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো প্রস্তাব দেয়নি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে আজকের সংলাপে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, তরিকুল ইসলাম, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব এসএসএম আবদুল হালিম, মো. ইসমাইল জবি উল্লাহ , আবদুর রশীদ সরকার ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী উপস্থিত আছেন।
সংলাপের ধারাবাহিকতায় ১৮ অক্টোবর বেলা ১১টায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে মতবিনিময় করবে ইসি। এ ছাড়া ১৬ অক্টোবর বেলা ১১টায় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ও বিকাল ৩টায় বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল), ১৯ অক্টোবর বেলা ১১টায় জাতীয় পার্টি (জেপি) ও বিকাল ৩টায় লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।
অন্যদিকে ২২ অক্টোবর বেলা ১১টায় অরাজনৈতিক সংগঠন নির্বাচনী পর্যবেক্ষক, ২৩ অক্টোবর বেলা ১১টায় নারী নেত্রী ও ২৪ অক্টোবর বেলা ১১টায় নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে মতবিনিময় করবে ইসি।
ইসি ঘোষিত কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত ৩১ জুলাই নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, ১৬ ও ১৭ আগস্ট গণমাধ্যমের প্রতিনিধি সঙ্গে সংলাপে বসে ইসি। এর পর ২৪ আগস্ট থেকে রাজনৈতিক নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ শুরু করে নির্বাচন কমিশন।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি