নিজস্ব প্রতিবেদক:
নিশ্চিত মৃত্যুর ফাঁদ হিসেবে বিশ্বের আতঙ্কিত ব্লু হোয়েল সুইসাইড গেম খেলতে গিয়ে অল্পের জন্য বেঁচে গেলেন হৃদয় (২০) নামে এক তরুণ। তিনি উপজেলার আলমনগর ইউনিয়নের বয়ড়াপাড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী আমজাদ আলীর ছেলে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এলাকার লোকজন। হৃদয়কে দেখতে তার বাড়িতে ঢল নেমেছে কৌতুহলী জনতার।
জানা যায়, হৃদয় গাজীপুরের একটি পেপার মিলে চাকরি করেন। ফেসবুক ব্যবহার করতে করতে ব্লু হোয়েল সুইসাইড গেম খেলায় আসক্ত হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে গত ১১ অক্টোবর তার ফেসবুক পেজে হাতে ব্লেড দিয়ে কেটে তিমি আঁকা একটি ছবি পোষ্ট করেন। ছবিটি ফেসবুকের মাধ্যমে হৃদয়ের মামা সৌদি প্রবাসী কবির হোসেনের নজরে আসে। কবির বিষয়টি সৌদি থেকে তার স্বজনদের জানালে গ্রামজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে। গত বুধবার রাতে তার পরিবারের লোকজন হৃদয়কে গাজীপুর থেকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে।
হৃদয় জানান, গত ২০ সেপ্টেম্বর মোবাইল ফোনে নেট অন করার সাথে সাথে মোবাইল স্কিনে একটা অ্যাপ ভাসতে থাকে। ব্লু হোয়েল সম্পর্কে আমি শুনেছি, তারপরও কৌতুহল বসত অ্যাপটি ওপেন করি। এরপর একটা কল আসে আমি রিসিভ করলে একজন অ্যাডমিনের নির্দেশে শুরু হয় গেমস খেলা। আস্তে আস্তে বেশ কিছু মজার মজার ধাপ খেলতে খেলতে আসে চ্যালেঞ্জিং পর্ব।
২০ দিন ধরে গেমটির কত পর্ব খেলেছে বা কী কী কাজ করেছে এমন প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট কোনো জবাব দিতে পারেননি হৃদয়। তিনি জানান, আমার তেমন কিছু মনে নেই, তবে গেমটি খেলতে খেলতে আমার হাতে তিমি মাছের ছবি আঁকতে বলা হয়েছিল। আমার হাত কেটে কিভাবে ছবি এঁকেছি আমি জানি না। রাতে কী করছি আমার কিছুই মনে পড়ছিল না।
হৃদয়ের নানা আবদুল হামিদ জানান, হৃদয়কে নিয়ে ভীষণ চিন্তিত হয়ে পড়েছি আমরা। তার মোবাইলসহ সিমকার্ড বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এইসব জীবনঘাতী গেম যেন ছেলে-মেয়েদের হাতে পৌঁছাতে না পারে সেই ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ করছি।
হৃদয়ের মা হাজেরা বেগম ছেলের প্রাণ হারানোর ভয়ে ভেঙে পড়েছেন। তারও দাবি এমন মরণ খেলা যেন সন্তানে কাছে না আসে। হৃদয়কে পারিবারিক কড়া নজরদারিতে রাখা হয়েছে। তার শাররিক ও মানসিক অবস্থা এখন শঙ্কামুক্ত।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ