২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১:১৫

বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

নিজস্ব প্রতিবেদক :

যুদ্ধাপরাধীদের মদদ দেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আদালত বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম মো. নূর নবী এ পরোয়ানা জারি করেন। মামলার বাদী এ বি সিদ্দিকী জানিয়েছেন একইসঙ্গে বিচারক আগামী ১২ নভেম্বর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিসংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ধার্য করেছেন। গত ৫ অক্টোবর বেগম খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির হতে শেষবারের মতো সময় দেন আদালত। ওই দিন আদালতে হাজির না হলে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হবে বলে  আদালত জানিয়ে দেন। কিন্তু তিনি এদিন আদালতে হাজির হননি। এজন্য আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়াকে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন আদালত। ওই দিন বিচারক তার আদেশে উল্লেখ করেন, আসামি বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সমন জারি করা হলেও তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গুরুতর নয়, শুধু মানহানিসংক্রান্ত, যা জামিনযোগ্য। ফলে আসামিকে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করতে বলা হলো। আত্মসমর্পণে ব্যর্থ হলে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যুসহ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগে চলতি বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি তেজগাঁও থানার ওসি (তদন্ত) এ বি এম মশিউর রহমান মামলার প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর গত ২২ মার্চ তা আমলে নিয়ে প্রাক্তন এ প্রধানমন্ত্রীকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন আদালত।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করলে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মন্ত্রিপরিষদ গঠন করেন। ওই মন্ত্রিপরিষদে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের যারা প্রকাশ্য এবং আত্মস্বীকৃত পাকিস্তানের দোসর ছিলেন সেই জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবির, আলবদর, আলশামস কমিটির সদস্যদের মন্ত্রী ও এমপি বানান। পরবর্তীকালে উক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে মৃত্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন দণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। তার মধ্যে তৎকালীন খালেদা জিয়ার সরকারের মন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। কিন্তু তারা ক্ষমতায় থাকাকালীন মন্ত্রিত্বের সুবিধা নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র এবং জাতীয় পতাকা তাদের বাড়ি এবং গাড়িতে ব্যবহার করেছেন। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া স্বাধীনতাবিরোধী ব্যক্তিদের তার মন্ত্রিসভায় মন্ত্রিত্ব প্রদান করে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত পতাকাকে উক্ত স্বাধীনতা বিরোধীদের গাড়িতে তুলে দিয়ে সত্যিকারের দেশপ্রেমিক জনগণের মর্যাদা ভূলণ্ঠিত করেছেন। তাই তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০০ ধারার মানহানির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। অন্যদিকে প্রচলিত আইনে মৃত ব্যক্তির বিচারের সুযোগ না থাকায় প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে অব্যাহতি প্রদানের সুপারিশ করা হলো।’
২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী স্বীকৃত স্বাধীনতা বিরোধীদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে দেশের মানচিত্র এবং জাতীয় পতাকার মানহানি ঘটানোর অভিযোগে সিএমএম আদালতে একটি মানহানির মামলা দায়ের করেন। ওই দিন ঢাকা মহানগর হাকিম রায়হানুল ইসলাম তেজগাঁও থানার ওসিকে মামলার তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলায় বেগম খালেদা জিয়া ও তার প্রয়াত স্বামী জিয়াউর রহমানকে আসামি করা হয়।
উল্লেখ্য, এর আগে গত সোমবার দুই বছর আগে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বিস্ফোরক আইনের একটি মামলায় আদালত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ ‘পলাতক’ আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। ওই মামলায় ৭৮ জনকে আসামি করে পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করে কুমিল্লার জেলা ও দায়রা জজ জেসমিন আরা বেগম ওই আদেশ দেন।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি

প্রকাশ :অক্টোবর ১২, ২০১৭ ১২:০২ অপরাহ্ণ