নিজস্ব প্রতিবেদক:
আগামী বৃহস্পতিবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালসহ তিন দিনব্যাপী কর্মসূচী ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। কর্মসূচীর অংশ হিসেবে বুধবার সারা দেশে বিক্ষোভ এবং শুক্রবার দোয়া দিবস পালন করবে তারা।
গত ৯ অক্টোবর রাতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক ঘরোয়া বৈঠক থেকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর মকবুল আহমাদ, নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সেক্রেটারী জেনারেল ডা: শফিকুর রহমানসহ জামায়াতের নেতাদের গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে সাজানো মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের প্রত্যেককে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়ার প্রতিবাদে ও তাদের মুক্তির দাবিতে এ কর্মসূচী ঘোষণা করেছে জামায়াত।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, সরকার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ সকল বিরোধী দলকে নেতৃত্ব শূন্য করে দেশকে একদলীয় শাসনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে গত ৯ অক্টোবর রাতে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে সাজানো মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের প্রত্যেককে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। সরকারের এ ধরনের অন্যায়, অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী আচরণের নিন্দা জানানোর কোনো ভাষা নেই।
তিনি আরো বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে সাজানো মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের প্রত্যেককে ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে সরকার মানবাধিকার লংঘন করে তাদের উপর চরম জুলুম করছে। কোন সভ্য গণতান্ত্রিক দেশে এ ধরনের অন্যায় আচরণ কখনো কল্পনাও করা যায় না। সরকারের এ অন্যায় ও অমানবিক আচরণে আমরা বিস্মিত ও মর্মাহত।
নতুন ভারপ্রাপ্ত আমীর বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেশের একটি আইনানুগ বৈধ রাজনৈতিক দল। অথচ সরকার দীর্ঘ প্রায় সাত বছর ধরে জামায়াতে ইসলামীকে প্রকাশ্যে কোন সভা-সমাবেশ ও মিছিল করতে না দিয়ে আমাদের আইনগত এবং সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার হরণ করেই চলেছে। সরকার দেশের সংবিধান ও আইন লংঘন করে জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধী দলের উপর জুলুম-নির্যাতন, নিপীড়ন চালাচ্ছে। সরকার জামায়াতসহ বিরোধী দলের নেতাদের অন্যায়ভাবে গ্রেফতার, গুম ও হত্যা করছে। কর্তৃত্ববাদী সরকার দেশের জনগণের উপর জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে দেশে এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।
তিনি বলেন, সরকার একে একে দেশের সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে অকার্যকর করে দিচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সরকারের জুলুম-নির্যাতনের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। সরকার বিচার বিভাগের স্বাধীনতাও হরণ করেছে। দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার বলতে কোনো কিছু আর বাকি নেই। দেশের জনগণ অসহায় হয়ে পড়েছে।
কর্মসূচি : (১) আগামীকাল ১১ অক্টোবর বুধবার সারা দেশে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ, (২) আগামী ১২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা শান্তিপূর্ণ সর্বাত্মক হরতাল এবং (৩) ১৩ অক্টোবর শুক্রবার গ্রেফতারকৃত নেতৃবৃন্দের মুক্তির জন্য সারা দেশব্যাপী দোয়া।
বিবৃতিতে জানানো হয়, হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, সংবাদপত্রের সাথে সংশ্লিষ্ট গাড়ি এবং ঔষধের দোকান হরতালের আওতামুক্ত থাকবে।
দৈনিক দেশজনতা /এন আর