নিজস্ব প্রতিবেদক:
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে মিয়ানমার সরকার যে প্রস্তাব দিয়েছে তা দেশটির ওপর আন্তর্জাতিক চাপ কমানোর একটি কৌশল বলে মনে করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী। মঙ্গলবার রাজধানীর ইস্কাটনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিইইএসএস) মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় মন্ত্রী এ কথা বলেন। পরারাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার নিজেরা যাচাই বাছাই করে প্রত্যাবাসনের কথা বলছে। ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে প্রত্যাবাসনের যে নীতি নেওয়া হয়েছিল তারা সেটাকে অনুসরণ করতে চাইছে। বাংলাদেশ সরকার এইবারের পরিস্থিতির মাত্রা ও ভিন্নতার বিষয়ে মিয়ানমারকে জানিয়েছে এবং প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে একটা খসড়া প্রস্তাব হস্তান্তর করেছে।
মাহমুদ আলী বলেন, রাখাইনের নাগরিকদের নিরাপত্তা মিয়ানমারকেই নিশ্চিত করতে হবে। তবে সংকট নিরসনে মিয়ানমারের ওপর চাপ আগের তুলনায় অব্যাহতভাবে বাড়ছে। আন্তর্জাতিক চাপ না হলে মিয়ানমার রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করবে না। গত আগস্টের শেষ দিকে পুলিশের কয়েকটি চেকপোস্টে হামলার জের ধরে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও রাখাইন সন্ত্রাসীরা রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নিধনে অভিযানে নামে। নির্যাতনের নামে তারা শত শত রোহিঙ্গাকে হত্যা ও বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়। নির্যাতন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশের দিকে ঢল নামে রোহিঙ্গাদের। ইতোমধ্যে পাঁচ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। রোহিঙ্গাদের ঢল এখনো অব্যাহত আছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিয়ানমারকে এই সহিসংতা বন্ধের আহ্বান জানালেও দেশটির সরকার তাতে কর্ণপাত করেনি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার সরকারের মধ্য বিভাজন হচ্ছে। সু চি এক কথা বলেন, তাদের রাষ্ট্রীয় প্রচারে বলে আরেক কথা। এ সংকট মিয়ানমার সৃষ্টি করেছে। এখন এটি আঞ্চলিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এতে বাংলাদেশের কোনো ভূমিকা নেই। মিয়ানমার সুপরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গাদের রাষ্ট্রহীন করে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আরও চাপ না দিলে মিয়ানমার রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে উদ্যোগী হবে না বলে মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা নির্মূলে যে পন্থা নিয়েছে তাদের সেজন্য আইনের আওতায় আনতে হবে। নিরাপদ প্রত্যাবসন নিশ্চিত না করে রোহিঙ্গাদের জোর করে মিয়ানমার পাঠানো যাবে না। এজন্য আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখতে হবে।’
মাহমুদ আলী বলেন, রোহিঙ্গা নির্মূল করার বিষয়ে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় মিডিয়া এটাকে মুসলিম সন্ত্রাসবাদ হিসেবে প্রচার করছে। আন্তর্জাতিক উদ্বেগ থাকাতে তারা এটি করে যাচ্ছে। মূল সমস্যা সমাধান করতে হবে। তাদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিতে হবে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি