দৈনিক দেশজনতা অনলাইন ডেস্ক:
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা বন্ধ হয়নি। প্রতিদিন দুই হাজারের মতো রোহিঙ্গা আসছে বাংলাদেশে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এ তথ্য জানিয়েছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে নতুন করে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা ৫ লাখ ১৫ হাজার দাঁড়িয়েছে।
সংস্থাটির পর্যবেক্ষকদের মতে, সম্ভবত এক লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। উত্তর রাখাইনের বুথিডং শহর এলাকা থেকে তারা আসছে। যারা আসছে তারা ক্লান্ত ও ক্ষুধার্ত। কয়েকদিন হেঁটে ও বিপদসংকুল নদী ও সাগর পেরিয়ে তারা আসছে। অনেকেই পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। রয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের অভাব। অনেকে ডায়রিয়া ও কলেরায় আক্রান্ত হয়েছে। এদিকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের একটি ড্রোন ভিডিও চিত্র সমপ্রতি প্রকাশ করা হয়েছে। ভিডিও চিত্রে বিস্ময়কর মাত্রার মানবিক বিপর্যয়ের দৃশ্য ফুটে ওঠেছে। এ মাসে ভিডিওটি ধারণ করা হয় এবং জরুরি দুর্যোগ কমিটি (ডিইসি) তা উন্মোচন করে। ভিডিওতে বালুখালী ক্যাম্পের চিত্র ও যতদূর চোখ যায় শুধুমাত্র তাবু ও ঝুপড়ি দেখা গেছে।
এদিকে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১৮ হাজার ৫ শ’ ২৩ জন গর্ভবতী নারী রয়েছেন। তারা নানা ধরনের জটিলতায় ভুগছে। শিশুরাও নানা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ব্যবস্থার অভাব, পাহাড়ি এলাকায় অনিয়মিত চলাচল, পুষ্টিহীনতা ও উপযুক্ত বিশ্রামের অভাবও দেখা যাচ্ছে। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ৮ লাখের বেশি রোহিঙ্গার জন্য বাংলাদেশ বিশাল শরণার্থী ক্যাম্প নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে। কিন্তু জাতিসংঘ তা ‘বিপদজনক’ হবে বলে মনে করেছে। জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তা রবার্ট ওয়াটকিনস একটি বড় শিবিরে লাখ লাখ শরণার্থীকে রাখার পরিকল্পনায় স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তাগত ঝুঁকি সৃষ্টির আশঙ্কা জানিয়েছেন। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির কাছে ওই মহাপরিকল্পনা নিয়ে এসব কথা বলেছেন ঢাকায় জাতিসংঘের এই আবাসিক সমন্বয়ক।
গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া জানান, সব রোহিঙ্গাকে কক্সবাজারের কুতুপালং ক্যাম্পে অস্থায়ীভাবে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে শনিবার ঢাকায় রবার্ট ওয়াটকিনস রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রসঙ্গে বলেন, ‘যখন বিপুল সংখ্যক মানুষ একটি সুনির্দিষ্ট সংকীর্ণ স্থানে থাকবে, আর সেই মানুষগুলো যদি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকে, তাহলে তাকে বিপদজনক বলতেই হবে।’
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি