২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৪:২০

শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত: খালেদা জিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক: আজো বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে নিপীড়িত শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ১ মে আন্তর্জাতিক মহান শ্রমিক দিবস উপলক্ষে দেশে বিদেশে কর্মরত সকল বাংলাদেশী শ্রমিক-কর্মচারী এবং বিশ্বের সকল শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষকে আন্তরিক শুভেচছা ও অভিনন্দন জানিয়ে এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।

বেগম জিয়া শ্রমিকদের উত্তরোত্তর সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি ও সাফল্য কামনা করে বলেন, ১৮৮৬ সালের মে মাসে শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার আদায় করতে গিয়ে আমেরিকার শিকাগো শহরে ‘হে মার্কেটে’ জীবনদানকারী এবং এই আন্দোলনের জন্য ফাঁসিকাষ্ঠে আত্মদানকারী প্রতিবাদী শ্রমিকদের স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা ।

তিনি বলেন, মহান মে দিবস ঐতিহাসিকভাবে একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন। শ্রমজীবী মানুষের রক্তঝরা ঘামেই বিশ্ব সভ্যতার বিকাশ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নতুন দিগন্ত উম্মোচিত হয়। শ্রমিকের ঐতিহাসিক অবদানের ফলেই বিশ্ব অর্থনীতি চাঙ্গা হয়। অথচ আজো বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে নিপীড়িত শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত।

খালেদা জিয়া বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল শ্রমিকদের ন্যায্য দাবির প্রতি সম্মান ও শ্রমের মর্যাদা সম্পর্কে সব সময় আপোষহীন সংগ্রাম করে গেছে। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায় এবং তা রক্ষায় আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি পালনে কখনো পিছপা হইনি। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিজেকে সবসময় একজন শ্রমিক হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ব ও স্বাচ্ছন্দবোধ করতেন। শ্রমিকদের দুটি হাতকে তিনি উন্নয়নের চাবিকাঠি ভাবতেন। এদেশের শ্রমজীবী ও পরিশ্রমী মানুষের কল্যাণে তিনি যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন।

সাবেক এই প্রধান মন্ত্রী বলেন, সেই ধারাবাহিকতায় সরকারে থাকতে আমরা এদেশের শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করেছি। শ্রম আইন সংস্কার ও আধুনিকীকরণ, বেতন ও মুজুরী কমিশন, গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরি নির্ধারণ, বাস্তবায়ন ও তাদের বোনাস প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ এবং শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন গঠন, গার্মেন্টস শ্রমিকদের সন্তানদের চিকিৎসা ও তাদের লেখা পড়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের শ্রমিক সমাজের ভাগ্যোন্নয়নে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ ও প্রয়োগ করেছি। খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের সার্বিক কল্যাণের লক্ষ্যে আমাদের এই প্রচেষ্টা আগামীতেও অব্যাহত রাখার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করছি। আমি মহান মে দিবসের সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করি।

ভিন্ন এক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, মহান মে দিবস উপলক্ষে আমি বাংলাদেশ ও বিশ্বের সকল শ্রমজীবী মেহনতি মানুষকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। তাদের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করি। বিশ্ব ইতিহাসে মে দিবস একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক দিন। শ্রমিকের ন্যায্য দাবি ও শ্রমের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে আমেরিকায় শিকাগো শহরে ১৮৮৬ সালের মে মাসে রচিত হয়েছিলো এক রক্তমাখা ইতিহাস। শোষকদের বিরুদ্ধে শোষণ ও বঞ্চনার শিকার প্রতিবাদী শ্রমিকদের আত্মাহুতির রক্তাক্ত পথে সারাবিশ্বে শ্রমিকদের দৈনিক ৮ ঘন্টা কাজের ন্যায্য অধিকার স্বীকৃতি পেয়েছিলো।

তিনি বলেন, সকল শ্রমজীবী কর্মজীবী মানুষের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। তাদের অধিকার ও মর্যাদা সুরক্ষায় আমরা সর্বদা সচেতন ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সমাজ প্রগতির পতাকাবাহী শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে আমরা সংকল্পবদ্ধ। শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। আগামীতেও আমরা একইভাবে শ্রমজীবী-কর্মজীবী মানুষের কল্যাণে নিরলস কাজ করে যাবো। আজকের এই মহান দিনে শ্রমিক স্বার্থ রক্ষায় সবাইকে দায়িত্বশীল ও উদ্যোগী হওয়ার জন্য আমি আহবান জানাই।

প্রকাশ :এপ্রিল ৩০, ২০১৭ ৬:১২ অপরাহ্ণ