আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বাংলাদেশে প্রবেশ করা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ১২০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে নতুন করে আবেদন করেছে জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা আইওএম। এই অর্থ দিয়ে সংস্থাটি বাংলাদেশে সদ্য প্রবেশ করা রোহিঙ্গাদের জন্য মানসম্মত আশ্রয় নির্মাণ ও সুরক্ষা প্রদান করবে। বুধবার সন্ধ্যায় আইওএম কক্সবাজার থেকে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে।
আইওএম ঢাকা অফিসের ন্যাশনাল মিডিয়া অফিসার শিরিন আক্তার বলেন, আইওএম রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য আশ্রয়, জরুরী, ত্রাণ সহায়তা, পানি, স্যানিটেশন ও নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে কাজ করছে।
গত ২৫ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের প্রাথমিক পর্যায়ে জাতিসংঘের সংস্থা সমূহের সমন্বয়ে গঠিত ক্রাইসিস গ্রুপ রোহিঙ্গাদের জন্য ৭৭ মিলিয়ন ডলার সাহায্যের আবেদন জানিয়েছিলো। সেই সমন্বিত আবেদনে আইওএমের চাহিদা ছিলো মাত্র ২৬মিলিয়ন ডলার। নতুন এই আবেদনে শুধু মাত্র আইওএমের চাহিদা হচ্ছে ১১৯.৭৭মিলিয়ন ডলার, উল্লেখ করেন তিনি।
আইওএমের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন আবেদনের এই সহায়তা প্রয়োজন হবে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে। যাতে আগামী বর্ষা মওসুমের আগে নব্বই হাজার পরিবারের প্রায় সাড়ে চার লাখ শরণার্থীকে মোটামুটি মানসম্মত আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা যায়।
নতুন সহায়তার এই আবেদন বুধবার সন্ধ্যায় বিভিন্ন দাতা ও সাহায্য সংস্থার কাছে পাঠানো হয়েছে, যা নিয়ে আরো আলোচনা ও সভা হবে বলে আইওএমের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বর্তমানে সাহায্য সংস্থাগুলো পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গার কাছে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছাতে হিমশিম খাচ্ছে উল্লেখ করে এই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, যে সব রোহিঙ্গা সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে এসেছে তাদের প্রায় সবাই তীব্র ক্ষুধা, শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা নিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। তাদের সবার পর্যাপ্ত সহায়তা দরকার।
বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য যে ২ হাজার একর জমি বরাদ্দ দিয়েছে তাতে বড় ধরনের উন্নয়ন করতে হবে। সেখানে কোন ধরনের সড়ক অবকাঠামো ও ড্রেনেজ সিস্টেম নেই। আইওএম সেখানে প্রায় ১৫০কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করবে।
আইওএমের প্রতিবেদনে বলা হয়োছে, বাংলোদেশে প্রবেশ করা পাঁচ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে কুতুপালং অস্থায়ী শিবিরে আছে এক লাখ ৭৮ হাজার, কুতুপালং রেজিষ্ট্রার ক্যাম্পে আছে ৩৪ হাজার, বালুখালিতে ৪৫হাজার, ময়নার গোনায় ৭১হাজার, শামলাপুরে ৩৪ হাজার, রইক্ষ্যাং এ ২৮হাজার, পুটিবুনিয়ায় ১৭হাজার, হাকিম পাড়ায় ৫২হাজার, জামতলিতে ২৫ হাজার, বর্মা পাড়া ২৮হাজার লেদায় ২৮হাজার ও নয়াপাড়ায় ৩৪হাজার রোহিঙ্গা বসবাস করছে।
বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে ১৭শতাংশ পরিবারের প্রধান হচ্ছেন নারী। এবার আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে ৬০শতাংশই হচ্ছে নারী ও শিশু।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ