নিজস্ব প্রতিবেদক :
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নির্যাতন, নিপীড়নের শিকার হয়ে প্রতিদিন বাংলাদেশ অনুপ্রবেশ করছে লাখ লাখ রোহিঙ্গা। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) তথ্য মতে ২ অক্টোবর পর্যন্ত ৫ লাখ ৭ হাজার রোঙিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। যা স্থানীয়দের হিসেবে মতে ১০ লাখ ছাড়িয়েছে।
এদিকে গত কয়েক দিন আবারো উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বাড়ছে বলে দাবি সংস্থাটির। বাংলাদেশ তথ্য বাতায়ন সূত্র মতে উখিয়া উপজেলার জনসংখ্যা ২ লাখ সাত হাজার ৩শ ৭৯জন আর টেকনাফে ২ লাখ ৩০ হাজার ১শ ৩৯জন । এর সাথে বাড়তি যোগ হলো আরো ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। যার ফলে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বিপদ সংকুল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বন্যপ্রাণী গুলোরও।
এদিকে সরকার ২ হাজার একর বনভূমিতে রোহিঙ্গাদের জন্য শেড নির্মাণ করার ঘোষণা দিলেও আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের বসতি গড়ে তোলার হিড়িক পড়েছে উখিয়া-টেকনাফ রেঞ্জের ১০ হাজার একর ভুমিতে। রোহিঙ্গা ¯্রােত অব্যাহত থাকলে সরকারি বনভূমি দখলের তালিকা আরো দীর্ঘ হবে এমনটি মনে করেন স্থানীয়রা।
বন বিভাগ সুত্রে জানা যায়, কুতুপালং রেজিষ্টার্ড ক্যাম্পসহ পুরনো রোহিঙ্গারা দখলে নিয়েছিল প্রায় ৬ হাজার এক বনভূমি। এবার নতুন করে দখল করে নিয়েছে ৪ হাজার একর বনভূমি। একের পর এক বনভূমি দখল করে বন উজাড় হওয়ার কারণে পশু-পাখির আবাস্থল নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি বনাঞ্চলে তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দেয়। যার ফলে প্রতিনিয়িত লোকালয়ে হানা দিচ্ছে হাতির পাল।
সোমবার রাতে উখিয়ার বালুখালীতে হাতিরপাল হানা দিলে এক রোহিঙ্গা শিশু নিহত হয়। আহত হয় আরো দুই জন। গত ১৫ দিনে পৃথক ঘটনায় হাতির আক্রমণে পিতা-পুত্রসহ তিন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আবুল খায়ের জানান, সোমবার দিবাগত রাতে উখিয়ার বালুখালী অস্থায়ী শিবিরে বন্য হাতি তান্ডব চালিয়ে ১০টির মত রোহিঙ্গা খুপড়ি ঘর ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়। এসময় মোবারেকা (১০) এক শিশু ঘটনাস্থলে প্রাণ হারায়। নুরুল ইসলাম (৫০), তার স্ত্রী ফাতেমা (৪৫) ও আড়াই বছরের শিশু আয়েশা বেগম গুরুতর আহত হয়।
তিনি বলেন, গত ১৭ সেপ্টেম্বর কুতুপালং এর নতুন রোহিঙ্গা ক্যাম্প মধুরছরা গুলশানপাড়ার এলাকায় এক হাতির পাল আক্রমণ চালায়। ওই সময় হাতির দল লোকজনের উপর হামলা চালায়। এই ঘটনায় পিতা-পুত্রসহ দুই জনের মৃত্যু হয়।
কক্সবাজার দক্ষিণ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আলী কবির পৃথক ভাবে রোহিঙ্গারা ১০ হাজার একর বন ভুমি দখলের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রতিদিনই নতুন নতুন পাহাড়ি জমি দখল করে ইচ্ছেমতো বস্তি তৈরি করছে রোহিঙ্গারা। অনেকেই ক্যাম্পের বাইরে গিয়ে ঝুপড়ি ঘর তৈরি করছে। অবশ্য কিছু কিছু রোহিঙ্গা বস্তি ইতিমধ্যে উচ্ছেদ করা হয়।
দৈনিক দেশজনতা/এম জে