২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৯:১৬

বাবা-মেয়ের পবিত্র সম্পর্ক নিয়ে বাজে কথা বলবেন না: হানিপ্রীত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

খুব শীঘ্রই ভারতের পাঞ্জাব-হরিয়ানা হাইকোর্টে আত্মসমর্পণ করবেন বলে ইন্ডিয়া টু ডে-কে দেয়া একান্ত সাক্ষতকারে জানিয়েছেন গুরমিত রাম রহিম সিংয়ের ‘দত্তক কন্যা’ হানিপ্রীত ইনসান। গত সপ্তাহে দিল্লি হাই কোর্ট হানিপ্রীতের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করার পর থেকে তার আত্মসমর্পণের সম্ভাবনা বাড়ছিল। প্রায় মাসখানেক পালিয়ে বেড়ানোর পর আজ মঙ্গলবার তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।

ডেরা প্রধান গুরমিত রাম রহিমের সাজা ঘোষণার পরই হরিয়ানা, পাঞ্জাব এবং দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় সহিংসতায় বহু মানুষ প্রাণ হারান। এর পরই গা ঢাকা দেন হানিপ্রীত ওরফে প্রিয়াঙ্কা তানেজা। তিনি ছাড়াও আরও কয়েকজন ডেরা সদস্যের বিরুদ্ধে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগ ছিল। খবর ছিল, তিনি নেপালে পালিয়ে গিয়েছেন।

একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে হানিপ্রীত বলেন, আমি ভারত ছেড়ে কোথাও যাইনি। নেপালে যাওয়ার খবর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। একদিন সত্যি প্রকাশিত হবেই। আমি মর্মাহত, আমাদের সঙ্গে যা ঘটছে তা কাম্য নয়। কী ভাবে আমাদের সঙ্গে এমন ব্যবহার হচ্ছে জানি না। আমরা সত্যিকারের দেশভক্ত। ভারতকে খুব ভালোবাসি।

বলতে বলতে কান্নায় ফুঁপিয়ে উঠেন হানিপ্রীত। কোনও রকমে সেই কান্না চাপার চেষ্টা করছেন সেটাও স্পষ্ট। চোখ-মুখ কার্যত ফ্যাকাসে। ভিজে যাওয়া চোখে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে একটা কথাই বলছেন, তিনি নির্দোষ। নির্দোষ তার ‘বাবা’ রাম রহিমও।

রাম রহিমকে যেদিন পঞ্চকুলার আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়, সে দিন তার সঙ্গে ছিলেন রাম রহিমের পালিত কন্যা হানিপ্রীতও। কিন্তু, রাম রহিমকে দোষী সাব্যস্ত করার পরেই পঞ্চকুলায় চূড়ান্ত তাণ্ডব চালায় ডেরা সাচ্চা সৌদার ভক্তেরা। অভিযোগ, সেই তাণ্ডব হানিপ্রীতের নির্দেশেই হয়েছিল।

এ প্রসঙ্গে হানিপ্রীত বলেন, ‘আমাকে যে ভাবে উপস্থাপিত করা হয়েছে, তাতে এখন নিজেকেই নিজে প্রচণ্ড ভয় পাচ্ছি। চূড়ান্ত মানসিক চাপে রয়েছি। কী করব বুঝতে পারছি না। আমি একা মেয়ে। আর এত্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আমাকে প্রশাসন অনুমতি না দিলে কী ভাবে আদালত চত্বরে যেতাম।! কী ভাবেই বা বাবার সঙ্গে হেলিকপ্টারে উঠতাম! ওরাই আমাকে অনুমতি দিয়েছিলেন। আমি কোথায় ছিলাম, তাণ্ডবের সময়! আর বাবাকে দোষী সাব্যস্ত করার পর ভীষণই ভেঙে পড়ি। কী ভাবে আমি জড়িত থাকব বলুন তো।’

রাম রহিমের সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে প্রচুর জলঘোলা হয়েছে। তা নিয়ে হানিপ্রীত ভীষণই হতাশ। একজন মেয়ের সঙ্গে তার বাবার স্বাভাবিক সম্পর্ক নিয়ে এ ভাবে কাদা ছোড়াটা মোটেই ভাল চোখে নিচ্ছেন না তিনি। তিনি বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না। বাবা-মেয়ের এমন পবিত্র সম্পর্ককে এরা কোথায় নামিয়েছে! আমি জানতে চাই, একজন বাবা তার মেয়ের মাথায় হাত রাখে না? একজন মেয়ে তার বাবার কাছে যায় না?’ যদিও তিনি তার প্রাক্তন স্বামী বিশ্বাস গুপ্তকে নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।

গত আগস্টের শেষ দিকে ডেরা প্রধানকে দোষী সাব্যস্ত করার দিন থেকেই পলাতক ছিলেন হানিপ্রীত। হানিপ্রীতের অভিযোগ, ডেরায় হাজার হাজার মহিলা রয়েছেন। সেখান থেকে মাত্র দুইজনের অভিযোগকেই গুরুত্ব দেওয়া হল কেন? এবং তাও চিঠির বয়ানের ভিত্তিতে! কেন ওই নারীরা সামনে এলেন না? প্রশ্ন হানিপ্রীতের।

দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ

প্রকাশ :অক্টোবর ৩, ২০১৭ ৩:৫২ অপরাহ্ণ