নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিংবা ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম আমিনুর রহমানকে গুম করেছে বলে অভিযোগ করেছেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ২০ দলীয় জোটের শরীক দল বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমানের সন্ধানের দাবিতে বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত এক নাগরিক মানববন্ধনে এ অভিযোগ করেন তিনি।
জাফারুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী নোবেল পাওয়ার জন্য চেষ্টা করছেন, অথচ তার রাষ্ট্রে প্রতিদিন কোথাও না কোথাও কেউ না কেউ গুম-খুনের শিকার হচ্ছেন। অস্থির দেশের প্রধানমন্ত্রী কিভাবে নোবেল বিজয়ের স্বপ্ন দেখেন আমি জানি না।’
তিনি বলেন, ‘দেশে রোহিঙ্গাদের মানবেতর জীবন-যাপন শুধু দেখলেই হবে না। এদের সমাধান করতে হবে। তাদেরকে আবার তাদের দেশে কিভাবে মর্যাদার সাথে ফিরিয়ে দেওয়া যায় সেই দায়িত্ব রাষ্ট্রপ্রধানকে নিতে হবে। তাদের স্বাস্থ্যসেবাসহ সকল সেবা নিশ্চিত করতে হবে।’ অবিলম্বে এম আমিনুর রহমানসহ গুম হওয়া সবাইকে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক বলেন, ‘গত ২৭ আগস্ট ২০১৭ দিবাগত রাতে নয়াপল্টনের কল্যাণ পার্টির কার্যালয় থেকে বাসায় যাওয়ার পথে আমিনুর রহমান নিখোঁজ হন। আজ পর্যন্ত তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। ইতিমধ্যে পুত্রের নিখোঁজ হওয়ার সংবাদে বৃদ্ধ মাতা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তিনি এখন মৃত্যুপথযাত্রী।’
আমিনুর রহমান সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমিন অবিবাহিত ছিল, আমার জানা মতে, তার সাথে ব্যক্তিগত কারো শত্রুতা ছিল না। তার ধ্যান-জ্ঞান রাজনীতির বাহিরে কিছু ছিল না। তাহলে কি বিরোধী দলের রাজনীতি করার কারণেই অল্প বয়সে তাকে গুমের শিকার হতে হলো? ’ তিনি আগামী ৪ অক্টোবর কল্যাণ পার্টির উদ্যোগে আমিনুরের সন্ধানের দাবিতে বৃহত্তর কর্মসূচিতে সকলকে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানান।
এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে দেশে গুম ও খুনের রাজত্বে পরিণত করেছে। বর্তমান সরকারের গুম, খুন, অপহরণ ও দুঃশাসন থেকে জাতি মুক্তি চায়। সরকার দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার ও সাংবিধানিক অধিকার ভুলুণ্ঠিত করে ক্ষমতা আঁকড়ে রয়েছে। জনবিচ্ছিন্ন এ সরকার আর কিছুদিন ক্ষমতায় থাকলে মানুষের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। ’
ন্যাপ মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া দেশে এখন বর্বরযুগের হিংস্রতা বিরাজ করছে অভিযোগ করে বলেন, ‘জনপদে জনপদে শঙ্কিত মানুষ যেকোনো মুহূর্তে প্রিয়জন হারানোর দুঃসংবাদ পেতে পারে এমন উৎকণ্ঠায় আছে। আতঙ্ক ও ভয়ে পরিব্যাপ্ত রাষ্ট্র ও সমাজ।’
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় মানবাধিকার সমিতির মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, ‘গুম-খুনের রাজনীতির মধ্য দিয়েই বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার তাদের অবৈধ ক্ষমতা টেকসই করতে চায়। আগামী ৭ দিনের মধ্যে কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমানকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে না দিলে জাতিসংঘসহ সংশ্লিষ্টদের বরাবর বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির পক্ষ থেকে স্মারকলিপিসহ বৃহত্তর কর্মসূচি প্রদান করা হবে।’
মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে আরও বক্তব্য দেন- জাগপা সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, এনপিপি মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, কল্যাণ পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মো. নুরুল কবির ভুইয়া পিন্টু, ভাইস-চেয়ারম্যান সাহিদুর রহমান তামান্না, ইসলামিক পার্টির যুগ্ম-মহাসচিব মাহমুদুল হাসান, এনডিপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব শামসুল আলম, ঢাকা মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ফরিদ উদ্দিন, বাগেরহাট জেলা বিএনপির উপদেষ্টা ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির, জিনাফের সভাপতি লায়ন মিয়া মো. আনোয়ার, গণসংস্কৃতি দলের সভাপতি এস. আল মামুন, আলোর মিছিলের সভাপতি কে.এম রকিবুল ইসলাম রিপন, কল্যাণ পার্টির দপ্তর সম্পাদক আল আমিন ভূইয়া রিপন, ন্যাপ ঢাকা মহানগরের সদস্য সচিব মো. শহীদুননবী ডাবলু প্রমুখ।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ