২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ২:২৫

দ্বিতীয় তিস্তা সেতুর কাজ তৃতীয় দফায়ও শেষ হয়নি

লালমনিরহাট প্রতিনিধি:

নানা অজুহাত আর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফলতির কারণে তৃতীয় দফায় মেয়াদ বাড়িয়েও এখনো কাজ শেষ হয়নি দ্বিতীয় ‘তিস্তা সড়ক সেতু’। এতে করে কমছে না রংপুর ও লালমনিরহাট জেলার প্রায় কয়েক লাখ মানুষের দুর্ভোগ ও ভোগান্তি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং নির্মাণ তদারকি সংস্থার খামখেয়ালির কারণে তৃতীয় দফায় সময় বাড়ানোর পরও সেতুর শতভাগ কাজ শেষ হয়নি। তবে নির্মাণ তদারককারী কর্তৃপক্ষ বলছে, সেতুর কাজ শেষ হয়েছে। এখন শুধু সংযোগ সড়ক তৈরির কাজ শেষ হলেই উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সেতুটি চালু হবে। অথচ গত জুন মাসেই তৃতীয় দফার বাড়তি সময়ের মেয়াদ শেষ হয়েছে।

স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতুর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। ২০১৪ সালের জুনে সেতুর কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু তা না হওয়ায় ২০১৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। তাতেও কাজ শেষ না হওয়ায় দ্বিতীয় দফায় ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। পরবর্তীতে আবারো তৃতীয় দফায় কাজের মেয়াদ বাড়িয়ে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত করা হয়েছিলো।

নির্মাণ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডব্লিউএমসিজি-নাভানা গ্রুপ ১২১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৯ দশমিক ৫ মিটার চওড়া এই সেতু নির্মাণে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। সেতুটির এক প্রান্তে রংপুরের গঙ্গাচড়া মহিপুরঘাট ও অন্যপ্রান্তে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ। এই দুই জেলার মানুষের মাঝে এক নিবিড় সেতুবন্ধন গড়ে তুলতেই দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতুর নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। এ অঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের এই সেতুটি চালু হলে এখানকার একমাত্র স্থলবন্দর বুড়িমারীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে সড়কটি পরিণত হবে আন্তর্জাতিক মহাসড়কে। কিন্তু গত জুনে তৃতীয় দফা বাড়তি সময়ের মেয়াদ শেষ হলেও নানা অজুহাতে সেতুটি চালু করা যাচ্ছে না। ফলে এখনও এ দুই জেলাবাসীর খেয়া পারাপারই একমাত্র ভরসা। এই বন্দর দিয়ে প্রায়ই চলাচল করা প্রকৌশলী এ টি এম মোহসীন, আমদানিকারক শাহজাহান বাবু, ব্যবসায়ী আসাদুজ্জামান লুডুসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে তারা বলেন, সেতুর কাজ শেষ না হওয়ার কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছি। নৌকা পারাপারের অনেক সময় মুমূর্ষু রোগী মারাও যায়। আমরা চাই এই কাজটি দ্রুতগতিতে শেষ হোক।

এদিকে সেতুর নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হলেও সংযোগ সড়কের জমি অধিগ্রহণ এবং কাজ ধীরগতিতে হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এলাকাবাসী। তবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নাভানা কন্সট্রাকশনের উপ-ব্যবস্থাপক সাধন কুমার পাল বলেন, সেতু নির্মাণের কাজ তারা শেষ করেছেন, সংযোগ সড়কের কাজ শেষ হলেই সেতুটি চালু করা যাবে। সরকারী দামের থেকে জমির দাম বেশি হওয়ার কারণে অনেকে জমি দিতে চাচ্ছে না। এই জায়গায় কিছু জমি ব্যক্তিগত রয়েছে। সেই জায়গাগুলো নিয়ে দ্রুত সমাধান করে রাস্তা তৈরি করা হবে।

লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার এলজিইডি প্রকৌশলী পারভেজ নেওয়াজ খান বলেন, সেতু প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। এখন মুল ব্রিজর সঙ্গে বিদ্যুৎ সংযোগসহ এপ্রোচ সড়কের কাজ বাকি। ৮শ ৫০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৯ দশমিক ৬ মিটার প্রস্থের এই সেতুটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১’শ ২১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি 

প্রকাশ :সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৭ ১২:০৬ অপরাহ্ণ