আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, মিয়ানমারের সঙ্কটকবলিত রাখাইন রাজ্যে মুসলিম রোহিঙ্গাদের বাড়িঘরে এখনো আগুন দেওয়া হচ্ছে। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পাওয়া সর্বশেষ ছবি ও ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রোহিঙ্গা মুসলমানদের গ্রামগুলো থেকে ধোঁয়া উড়ছে। এ ঘটনা দেশটির নেত্রী অং সান সু চির বক্তব্যের বিপরীত। কারণ তিনি গত মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনী অভিযান বন্ধ করেছে।
লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠনটি তাদের রাখাইন সূত্রের বরাত দিয়ে বলেছে, শুক্রবার বিকেলে নেওয়া ছবি ও ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, দেশটির নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য ও উগ্রবাদীরা বাড়িঘরে আগুন দিচ্ছে।
অ্যামনেস্টির ক্রাইসিস রেসপন্সের পরিচালক তিরানা হাসান বলেছেন, ‘অং সান সু চি বিশ্ববাসীর কাছে যে দাবি করেছেন তা যে মিথ্যা, ভূমি ও আকাশ থেকে পাওয়া ভয়ংকর তথ্য তাই বলছে।’
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েই তারা (সেনা) সন্তুষ্ট হচ্ছে না, বরং তারা (রোহিঙ্গা) যাতে আর কোনো দিন তাদের বাড়িতে ফিরতে না পারে সে ব্যবস্থাও করছে। এভাবে চলতে থাকলে ভিকটিমরা সন্ত্রাসের পথ বেছে নিতে পারে।’
এদিকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিষয়ক মার্কিন কূটনীতিক প্যাট্রিক মুর্ফি বলেছেন, মিয়ানমারের চলমান সহিংসতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় তার দেশ গভীর উদ্বিগ্ন অবস্থায় আছে।
ডেপুটি অ্যাসিসটেন্ট সেক্রেটারি মুর্ফি শুক্রবার এক কনফারেন্সে রাখাইনে সহিংসতা বন্ধ, বেসামরিক লোকদের রক্ষা এবং ওই এলাকায় মানবিক সাহায্য পৌঁছানোর সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।
জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি যে সুপারিশ করেছে তা বাস্তবায়নে মিয়ানমারের বেসামরিক সরকারের সঙ্গে কাজ করতে দেশটির সেনাবাহিনীর প্রতিও আহ্বান জানান এই মার্কিন কূটনীতিক।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের নিরাপত্তাবাহিনীর কয়েকটি চেকপোস্টে উগ্রবাদীদের হামলায় ১২ জন নিহত হওয়ার পর সর্বশেষ সহিংসতা শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। এ পর্যন্ত ৪ লাখ ২২ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।
পালিয়ে আসাদের অভিযোগ, মিয়ানমারের নিরাপত্তাবাহিনী ও বৌদ্ধরা তাদের ওপর নির্বিচারে হামলা ও বাড়িঘরে আগুন দিচ্ছে। কিন্তু দেশটির সরকার বলছে, রোহিঙ্গারা নিজেদের বাড়িঘরে আগুন দিচ্ছে। অথচ জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংগঠন মিয়ানমারের এই পদক্ষেপকে জাতিগোষ্ঠী নিধন বলে উল্লেখ করেছে।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ