নাটোর প্রতিনিধি:
নাটোরে কমতে শুরু করেছে চালের দাম। তবে দাম কমার সাথে সাথে বাজারে ক্রেতার সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার সকালে শহরের কানাইখালী চাল বাজার, স্টেশন বাজার, মাদ্রাসা বাজার ও নিচা বাজার চাল মার্কেটসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমনটাই দেখা গেছে। কোরবানির ঈদের পর হঠাৎ করেই বাড়তে শুরু করেছে মোটা-চিকনসহ সব ধরনের চালের দাম। এসব চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছিল প্রতি কেজিতে অন্তত ৮ থেকে ৯ টাকা। এর ফলে বিপাকে পড়েন খেটে খাওয়া দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ। তবে গত বুধবার থেকে বাজারে চালের দাম কমতে শুরু করেছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, গত কয়েক দিনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের পর বড় বড় মজুতদার ও আড়ৎদাররা চাল বিক্রি করতে শুরু করেছে। এরফলে বাজারে চালের আমদানি বেশি হওয়ায় সব রকম চাল কেজিপ্রতি প্রায় ৩ টাকা করে কমে গেছে। ব্যবসায়ীরা মনে করছেন এভাবে বাজারে চালের আমদানি হতে থাকলে দ্রুত চালের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে চলে আসবে। এদিকে বাজারে চালের দাম একটু কম হওয়ায় ক্রেতাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
সূত্র জানায়, নাটোর জেলায় ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ১২শ চালকলে ধান থেকে চাল উৎপাদন করা হয়। আর এসব চালকলে জেলার চাহিদা মিটিয়ে চাল বাইরের জেলাগুলোতে পাঠানো হয়। নাটোর শহরের মাদ্রাসা বাজার, স্টেশন বাজার, কানাইখালী চাল আড়ত ঘুরে দেখা গেছে, মোটা চাউলের মধ্যে গুটি স্বর্ণা ধানের চাল পাইকারি বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৪৩ থেকে ৪৪ টাকায়, ৪৯ জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকায়, স্বর্ণ ধানের চাল ৪৯ টাকায় আর মিনিকেট দোকান ভেদে ৫২ থেকে ৫৪ টাকায়, ভাল পাইজাম চাল এখনও ৬০ থেকে ৬২ বিক্রি হতে দেখা গেছে। অথচ এক মাস আগেই গুটি স্বর্ণা ধানের চালের দাম ছিল কেজিপ্রতি ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা, ৪৯ জাতের ধানের চাল ৩৯ থেকে ৪০টাকা এবং মিনিকেট ৪৫ থেকে ৪৬ টাকায় আর পাইজাম বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৫৭ টাকায়।
পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছে, গত এক মাস ধরেই বাড়তির দিকে মোটা এবং চিকন চালের বাজার। মিলগুলো থেকে বেশি দামে চাল তারা কিনছেন। ফলে তাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এখন চালের দাম কিছুটা কমতে শুরু করলেও বাজারে ক্রেতা তেমন একটা নেই। নাটোর কানাইখালী চালপট্টির পাইকারি চাল ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজ বলেন, ‘বিগত প্রায় এক মাস ধরে সব ধরনের চালের দাম বেড়ে চলছে। মোটা চাল কেজিপ্রতি ৬ থেকে ৭টাকা, চিকন মিনিকেটসহ অন্যান্য চাল কেজিপ্রতি ৮ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে।’ কানাইখালী চাল বাজারে আসা ক্রেতা আসলাম শেখ জানান, গত সপ্তাহে চাল কিনতে এসে তিনি ঘাবড়ে গিয়েছিলেন চালের দাম শুনে। তবুও চাল কিনতে হয়েছে বেশি দামেই। আজ বাজারে এসে তিনি জানতে পারলেন চালের দাম কিছুটা কমেছে। তাতে করে তিনি এখন সামান্য স্বস্তি পেয়েছেন। তবে চালের দাম আরও কমানোর দাবি জানান।
নাটোর চাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলেম খান চৌধুরী বলেন, ‘বাজারে ধানের আমদানি না থাকায় এবং বর্ষাজনিত কারণে চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছিল। তবে এখন বাজারে চালের সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে চালের দামও অনেকটা কমতে শুরু করেছে। এভাবে চালের আমদানি থাকলে খুব দ্রুত চালের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে চলে আসবে।’
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি