নিজস্ব প্রতিবেদক:
অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনায় মুখ থুবরে পড়েছে মাদারীপুরের বিসিক শিল্পনগরী। তার সাথে যোগ হয়েছে সড়ক ভরা খানাখন্দে আর জলাবদ্ধতা।
নানাবিধ সমস্যায় চরম দুর্ভোগে বিসিকের ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘদিন ধরে চলা সমস্যার কারণে বড় বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছেন অনেকেই।
সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও শিল্পায়নের লক্ষ্যে শহরের তরমুগুরিয়ায় গড়ে তোলা হয় মাদারীপুর বিসিক শিল্পনগরী। ১৬ একর জমিতে ১৯৮১ সালে শিল্পনগরীটি স্থাপন করে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)। ১৩৫টি প্লটে ভাগ করে বরাদ্দযোগ্য ১২৬টি প্লট বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে মালিকদের বরাদ্দ দেওয়া হয়।
এর মধ্যে অর্ধশতাধিক প্লট বরাদ্দ নিয়ে গোডাউন হিসেবে ভাড়া দেয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে মাদারীপুর বিসিক শিল্পনগরীর অভ্যন্তরের প্রায় সবকটি সড়কই খানাখন্দে ভরপুর। বর্ষায় এর ভোগান্তির মাত্রা বেড়ে হয় দ্বিগুণ। এতে বিঘ্নিত হচ্ছে পণ্য পরিবহন, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন শিল্প মালিকরা। এদিকে বিসিক কর্মকর্তাদের অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনার কারণে মুখ থুবরে পড়েছে শিল্পনগরী।
নতুন বিনিয়োগে আকৃষ্ট হচ্ছে না উদ্যোক্তরা। একারণে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন অনেকে। এছাড়াও বিসিকের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজসে বিসিকের প্লটে শিল্প প্রতিষ্ঠান না করে ভাড়া দেয়া হচ্ছে। বিসিকে গড়ে উঠেছে জ্বালানী কাঠের দোকান। এছাড়াও ১০/১২টি কাঠের আড়ৎ বসিয়ে আরও কিছু লোক ব্যবসা করে যাচ্ছে যাদের তেমন কোনো বৈধতা নেই। ফলে সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। এতে করে ব্যহত হচ্ছে মূল উদ্দেশ্য। বিসিকে শিল্প প্লটের পরিবর্তে গড়ে উঠেছে গোডাউন। ফলে সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।
ভাই ভাই ওয়েল মিলের মালিক হাবিবুর রহমান জানান, রাস্তাঘাটের করুণ দশার কারণে তাদের মালামালের উৎপাদন ও বিপণন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। অবিলম্বে সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ বিসিক শিল্পনগরীর উন্নয়ন দাবি করেছেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, বর্তমান কর্মকর্তাদের অনিয়ম আর দুনীতির কারণে বিসিক শিল্পনগরী মুখ থুবরে পড়েছে। তারা ব্যবসায়ীদের কোন ধরনের সহযোগিতা করেনা।
বিসিক শিল্পনগরীর উদ্যেক্তা এবং মাদারীপুর পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান নুর ই আলম চৌধুরী বাবু বলেন, আমার একটি প্লট হস্তান্তরের জন্য বিসিকের বর্তমান কর্মকর্তা ইউসুফ আলি মোল্লা মোটা অংকের টাকা উৎকোচ নিয়েছে। তার কাছে টাকা ছাড়া কোন কাজ হয় না।
মাদারীপুর সচেতন নাগরিক কমিটির সদস্য রাজন মাহমুদ বলেন, মাদারীপুর বিসিকে শিল্প প্লট ভাড়া নিয়ে অনেকেই গোডাইন হিসেবে ভাড়া দিচ্ছে। এতে সরকারের আসল উদ্দেশ্য ব্যহত হচ্ছে। তিনি এব্যাপারে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।
মাদারীপুর বিসিক শিল্প নগরীর এজিএম ইউসুফ আলি মোল্লা তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বর্তমানে রাস্তাঘাটের কিছুর সমস্যা রয়েছে। উৎকোচ গ্রহণের বিষয়টি সত্য নয়।
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মো. ওহিদুল ইসলাম বলেন, কিছু অনিয়মের কথা আমি শুনেছি। দ্রুতই এব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।