নিজস্ব প্রতিবেদক:
চালের মজুদ পর্যাপ্ত। বিভিন্ন দেশ থেকে ব্যাপক আমদানিও হচ্ছে। দাম বাড়ার যৌক্তিক কোনও কারণ নেই। বেশ কিছুদিন ধরে মন্ত্রীরা এমন বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এবার সরকার পরিচালিত ওএমএসের (খোলাবাজারে বিক্রি) চালের দামও দ্বিগুণ করা হয়েছে। সরকারের এমন সিদ্ধান্তে হতাশ ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
গত মে মাসে সংগ্রহ অভিযানের কারণ দেখিয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয় যখন ওএমএসে বিক্রি স্থগিত করে তখন কেজি প্রতি চালের মূল্য ছিল ১৫ টাকা। এবার তা ৩০ টাকা করা হয়েছে।
খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বদরুল হাসান এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, বাস্তবতার আলোকে চালের মূল্য দ্বিগুণ করা হয়েছে। এটা ওএমএস চালুর দিন আজ থেকেই কার্যকর হবে। তবে আটার মূল্য বাড়ছে না। যদিও বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে চালের দাম বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছিলেন, মধ্যবিত্তদের জন্য ১৫ টাকায় চাল ও ১৭ টাকা কেজি দরে আটা রোববার থেকে খোলাবাজারে বিক্রি শুরু করবে সরকার। কিন্তু খাদ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী মন্ত্রীর বক্তব্য সঠিক নয়। খাদ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চাল বিক্রি হবে ৩০ টাকা কেজি দরে। তবে আটা ১৭টাকা কেজিতেই মিলবে। খাদ্য অধিদপ্তর আরও জানায়, নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাজধানীতে ১২০ ও সারা দেশে ৫৭০টি পয়েন্টে ওএমএসের মাধ্যমে চাল বিক্রি করা হবে। ডিলার প্রতি দুই টনের বদলে এক টন চাল সরবরাহ করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চালের বাজার বশে আনতে সরকার একের পর এক দেশের সঙ্গে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকে সই করছে। এমন অবস্থার মধ্যেই গত কয়েক দিনে কেজিপ্রতি চালের দাম ৮ থেকে ১০ টাকা করে বেড়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় মনে করে, হাওরে আগাম বন্যায় ফসলহানির পর দুই দফা বন্যায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ফসল নষ্ট হয়েছে। এতে করে বেশ কয়েক মাস আগে বেড়ে যাওয়া চালের দাম গত কয়েকদিনে আরো বেড়েছে। এদিকে গতকাল রাজধানীর কাওরান বাজার, হাতিরপুলসহ কয়েকটি বাজারে সবজি, মাছ এবং মুরগির দাম আগের মতো স্থিতিশীল থাকলেও নতুন করে আবারো বেড়েছে চালের দাম।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাড়তি দামে কিনে বাড়তি দামে বিক্রি করবো- এটাই স্বাভাবিক। চালের খুচরা ব্যবসায়ী মেসার্স ভাই ভাই স্টোরের স্বত্বাধিকারী মাজহারুল ইসলাম জানান, মোটা স্বর্ণা ও পারিজা চাল প্রতি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকা দরে। এ ছাড়া মিনিকেট কেজি প্রতি ৯ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে (ভালো মানের) ৬৪ টাকা দরে, মিনিকেট (সাধারণ) ৬০ টাকা, বিআর-২৮ ৫৮ টাকা, উন্নত মানের নাজিরশাইল ৭০ টাকা, পাইজাম চাল ৫৫ টাকা, বাসমতি ৭২ টাকা, কাটারিভোগ ৭৬ টাকা এবং পোলাও চাল ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি