নিজস্ব প্রতিবেদক:
মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতন থেকে ১৩ দিনের শিশুও রক্ষা পায়নি। তারা গ্রামে এসে লুটপাট শেষে লোকজনকে না পেয়ে ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। যাওয়ার সময় উঠানে রোদে শোয়া নবজাতক সাইফুল আরমানের দিকে ছুড়ে মারে আগুন। এতে তার বুক ও হাতের অনেক অংশ পুড়ে যায়। রাখাইনের রাচিডং থেকে আসা শিশুটির বাবা সৈয়দ নুর শিশুর প্রতি এই বর্বরতার বর্ণনা দিয়েছেন। আরমান এখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গতকাল ভোরে তাকে এ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সৈয়দ নুর গণমাধ্যমকে বলেন, সকালে সেনাবাহিনীর লোকজন ও তাদের সহযোগী স্থানীয় মগদের আমাদের গ্রামের দিকে আসতে দেখি। তখন আমরা পাশের জঙ্গলে পালিয়ে যাই। সে সময় ১৩ দিনের শিশু আরমানকে বহন করা সম্ভব হচ্ছিল না। তাই আল্লাহর ওপর ভরসা করে তাকে উঠানে একটি পাটিতে রেখে যাই। মনে করেছিলাম, এত ছোট শিশু, তাকে আর কী করবে তারা। কিন্তু ঘরে আগুন দিয়ে যাওয়ার সময় তারা একটি জ্বলন্ত কাঠ শিশুটির দিকে ছুড়ে মারে। সেটি তার বুকের ওপর পড়লে বুক ও হাত আগুনে পুড়ে যায়। তিনি বলেন, আরমান আগুনে পুড়ে নিস্তেজ হয়ে যায়। কিন্তু প্রাণ থাকায় পরিবারের অন্যদের নিয়ে পালিয়ে আসার সময় তাকেও নিয়ে আসি। পথে ১০ দিন টানা হেঁটে উপকূলে হাজির হই। দীর্ঘপথ হাঁটতে হাঁটতে আর অনাহারে মায়ের বুকেও দুধ পাওয়া যাচ্ছিল না। পথে কোথাও বসে যে একটু পানি পান করব, সেই অবস্থাও ছিল না। তবু শিশুটিকে বুকের ওম দিয়ে রেখেছিলাম আমি ও আমার স্ত্রী।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর সৈয়দ নুর টেকনাফে পৌঁছার পর তাদের চিকিৎসার জন্য টেকনাফের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের মেডিসিন স্যঁ ফ্রঁতিয়ে হাসপাতালে আনা হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি