২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৬:৪৯

বগুড়ায় কৃষি জমি উজার করে চলছে ইটভাটা নির্মান

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আইনের তোয়াক্কা না করে এবং কৃষি উর্বর ফসলী জমি উজার করে বগুড়ার শাজাহানপুরে নির্মান করা হচ্ছে ইটভাটা। তথাপি বিষয়টি দেখার যেন কেউ নেই।

সরেজমিনে দেখাগেছে, শাজাহানপুর উপজেলা পরিষদ হতে মাত্র এক কিলোমিটার সামনে জোকা গ্রামের অভ্যান্তরে বারমাস শাকসবজি ও ধান চাষের জমি উজার করে নির্মান করা হচ্ছে বিশাল আকৃতির ইটভাটা। এরই মধ্যে ভাটার চিমনী তৈরীর কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে। কিন্তু কিভাবে অনুমোদন ব্যতিরেকে উর্বর ফসলী জমিতে ইটভাটা নির্মান চলছে এবং দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের দৃষ্টিতে পড়ছেনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এলাকার সাধারন জনগন।

সরকারী বিধি মোতাবেক, কৃষি অফিস ভুমি অফিস, বন বিভাগ, স্বাস্থ বিভাগ, প্রশাসনিক বিভাগ এবং জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ব্যতিত ইটভাটা নির্মান সম্পুর্ণ বে-আইনী। তাছাড়াও সারা বছর কৃষি পন্য উৎপাদনশীল উর্বর ফসলী জমি এবং পাড়া মহল্লার ভিতরে ইটভাটা নির্মানের অনুমতি দেয়ার এখতিয়ার পরিবেশ অধিদফতর সহ কোন বিভাগেরই নেই। শুধু তাই নয়, আইনগতভাবে এসব কর্মকর্তা ও পরিবেশ অধিদফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধির সরেজমিনে পরিদর্শন পুর্বক যাচাই করে অনুমোদন নেয়ার পর ইটভাটা নির্মান করতে হয়। কিন্তু এ সবকিছুই উপেক্ষা করে ফসলী জমি উজার করে এবং পাড়া মহল্লার ভিতরে উপজেলার চোপিনগর গ্রামের মোবারক আলীর ছেলে আবদুর রাজ্জাক ( বুলা), জোকা গ্রামের মোঃ জব্বার মন্ডলের ছেলে জরকিছ, একই গ্রামের আবুল মন্ডলের ছেলে আবদুল হাই, সমসের প্রাং ছেলে সফিক এবং চোপিনগর গ্রামের আকরাম হোসেন যৌথভাবে জে,বি, এফ ( ঔ.ই.ঋ) নামের ইটভাটা নির্মান করছে। তাদের নিকট ভাটা নির্মানের কোন অনুমোদন আছে কিনা জানতে চাইলে তারা কোন কাগজ দেখাতে পারেনি।

এদিকে জেবিএফ ইটভাটা নির্মানের অনুমোদনের বিষয়টি নিয়ে পরিবেশ অধিদফতর বগুড়া এর নির্বাহী পরিচালক একেএম মাসুদুজ্জামান এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঐ ইটভাটার কোন অনুমোদন দেয়া হয়নি। আর শাজাহানপুর সহকারী (ভুমি) কমিশনার এসএম জাকির হোসেন ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামছুদ্দিন মোঃ ফিরোজের নিকট এ সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলেন, কৃষি উর্বর ফসলী জমিতে ইটভাটা নির্মানের অনুমতি দেয়ার প্রশ্নই আসেনা। এতদাসত্বেও কিভাবে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে কৃষি উর্বর ফসলী জমি উজার করে জেবিএফ ইটভাটা নির্মান চলছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার সাধারন জনগন।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, এ ইটভাটা নির্মিত হলে আগুনের লেলিহান শিখার তাপে তাদের অনেক কৃষি জমিতে চাষাবাদ ব্যহত হবে। উর্বর জমি হলেও গাছপালা ও ফসলে পোকা মাকড় দেখা দিবে এবং বিস্তার লাভ করবে পরিবেশের ক্ষতিকর প্রভাব। তারা আরও জানান, ফসলের চেয়ে ইটভাটায় মাটি বিক্রিতে বেশী লাভ। এমন উৎসাহ এবং বেশী টাকার প্রলোভন দিয়ে অভাবী কৃষকদের নিকট থেকে জমিগুলো হাতিয়ে নেয়া হয়েছে।

এদিকে উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানাযায়, উপজেলার খলীশাকান্দী, জোকা এবং শাহনগর এলাকার জমিগুলো সবচেয়ে বেশী কৃষি উর্বর। যার ফলে এসব এলাকায় ধান,গম,ভুট্রা,আলু, বেগুন, শীম,পেঁয়াজ, মরিচ, ফুলকপি,বাঁধাকপি, মুলা,পটল, পুঁইশাক, লালশাক, ধনেপাতা সহ বিভিন্ন তরি-তরকারী চাষ হয় সারাবছর। এ কারনে এখানকার এসব কৃষিপণ্য প্রতিদিন ঢাকা চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যায় এবং দেশের খাদ্য চাহিদা পুরন করে। তাই কৃষি উর্বর ফসলী জমি রক্ষার্থে প্রশাসন এবং পরিবেশ অধিদফতর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করবে এমন প্রত্যাশা এলাকার কৃষক সহ সাধারন জনগনের।

দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৭ ১০:০৬ পূর্বাহ্ণ