আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
জাতিসংঘ জানিয়েছে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের সহায়তার জন্য ৭ কোটি ৭০ লাখ ডলারের প্রয়োজন। শনিবার সংস্থার এক বিবৃতিতে বলা হয়, “সীমান্তে পালিয়ে আসা মানুষের ঢল ক্রমেই বাড়ছে। এদের সংখ্যা দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় সেই অঞ্চলে অবস্থিত আশ্রয় শিবির ও অস্থায়ী বসতিগুলোর উপর চাপ বাড়ছে। এত মানুষের চাপ সামলাতে গিয়ে স্থানীয় মানুষেরাও হিমশিম খাচ্ছেন।” জাতিসংঘের হিসেবে, মিয়ানমারের রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে গত ক’দিনে অন্তত ৩ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ফলে কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বেড়ে তিনগুণ হয়েছে। সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়, এরই মধ্যে জাতিসংঘের জরুরি ত্রাণ তহবিল থেকে ৭০ লাখ ডলার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা শরণার্থী শিবিরের ভেতরে ও বাইরে থাকা মানুষের জীবন রক্ষাসহ মৌলিক সেবা নিশ্চিত করা হবে।
এদিকে, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক ঘোষণা দিয়েছেন মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আরও ত্রাণ সাহায্য দেওয়ার। তিনি শনিবার রাজধানী কুয়ালালামপুরে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের একথা বলেন। এসময় নাজিব রাজাক রোহিঙ্গাদের উপর বর্বরোচিত হামলার জন্য মিয়ানমার সরকারের সমালোচনাও করেন। পাশাপাশি এত বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানুষকে আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের উদারতার প্রশংসা করেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, পরিস্থিতি জানতে মালয়েশিয়ার একটি প্রতিনিধিদল ঢাকায় যাচ্ছে। সোমবার তাদের ঢাকায় আসার কথা। তিনি মালয়েশিয়া প্রথম থেকেই এই নির্যাতনের বিরোধিতা করে আসছে বলেও দাবি করেন। রাজাক বলেন, মালয়েশিয়া শুরু থেকেই মানবতাবিরোধী এমন কর্মকাণ্ডের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। রোহিঙ্গা মুসলিমদের প্রতি যা হচ্ছে তা ক্ষমার অযোগ্য! শনিবার সন্ধ্যায় প্রথম চালান হিসেবে মালয়েশিয়ার ত্রাণ বাহি বিমান চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়।
গত বছরের ২৫ আগস্ট রাতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে অবস্থিত সীমান্ত পুলিশ ও সেনা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার ঘটনার জেরে বিশেষ অভিযানের নামে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। এসময় জঙ্গি দমনের নামে নিরস্ত্র রোহিঙ্গাদের নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। শান্তিতে নোবেল জয়ী অং সান সুচি সরকারের রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞের কারণে সীমান্ত পেড়িয়ে লাখ লাখ মানুষ বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। মিয়ানমার আন্তর্জাতিক মহলের তীব্র নিন্দার মুখেও এই দমন অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি