আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মিয়ানমারের প্রতি রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জাতি নির্মূলের ঝুঁকির বিষয়ে মিয়ানমারকে সতর্ক করেছেন তিনি।
অ্যান্তোনিও গুতেরেস মঙ্গলবার এই আহ্বান জানালেন যখন মিয়ানমার ছেড়ে হাজার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে। ২৫ আগস্ট থেকে রোহিঙ্গাবিরোধী সহিংসতা শুরু হওয়ার পর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর হাত থেকে বাঁচতে এরই মধ্যে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশ অনুপ্রবেশ করেছে।
অজ্ঞাত ব্যক্তিরা মায়ানমার পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কয়েকটি পোস্টে আগুন দেয়ার পর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নির্বিচার অভিযান শুরু করে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। রোহিঙ্গাদের বসতবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। শিশু-বৃদ্ধ নির্বিশেষে সব বয়সি রোহিঙ্গাদের হত্যা করা হচ্ছে। যৌথ বাহিনীর সঙ্গে মৌলবাদী বৌদ্ধরা যোগ দিয়ে লুটতরাজ ও নির্যাতন চালাচ্ছে।
গত ১১ দিনের সহিংসতায় প্রায় ৪০০ রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে বহু মানুষ। মায়ানমারে গুলিবিদ্ধ হওয়া কয়েকজন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসার পর মারা গেছেন। সীমান্ত এলাকা ও সামীনা নির্ধারণকারী নাফ নদী থেকে বেশ কয়েকজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের গুতেরেস বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ক্ষোভ ও তাদের অধিকারের অমীমাংসিত বিষয়গুলো দীর্ঘদিন ধরে জমে আছে এবং আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতার জন্য অনস্বীকার্য ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছে।’
তিনি বলেন, ‘সহিংসতার এই ভয়ানক চক্রের ইতি টানতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে এবং তাদের সবাইকে প্রয়োজনমতো নিরাপত্তা ও সহায়তা দিতে হবে।’
মিয়ানমারে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ নিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মহাসচিব গুতেরেস। এ জন্য ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে চিঠি দিয়েছেন তিনি।
নিরাপত্তা পরিষদের কাছে মহাসচিবের চিঠি দেয়া একটি বিরল ঘটনা। চিঠিতে গুতেরেস বলেছেন, ‘সংকট আরো ঘনীভূত হওয়া ঠেকাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেয়ার দায় রয়েছে।’
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ