নিজস্ব প্রতিবেদক:
কিশোরগঞ্জে দিন দিন বাড়ছে ভাসমান সবজি চাষ। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের অর্থায়নে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ‘বন্যা ও জলাবদ্ধতা প্রবণ এলাকায় ভাসমান সবজি ও মসলা উৎপাদন চালু করেছে। সদর উপজেলার মহিনন্দ ইউনিয়নের একটি বিলে গিয়ে ভাসমান অনেক সবজি বাগান দেখা গেছে। গোপালগঞ্জ, বরিশাল ও ফরিদপুরের পর কিশোরগঞ্জে এ পদ্ধতিতে চাষ কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
সদর উপজেলার মহিনন্দ ইউনিয়নের একটি বিলে আনুমানিক ৫০টি ভাসমান সবজির বেড দেখা গেছে। এসব বেডে লালশাক, পুঁইশাক, কলমিশাক, ঢেঁড়স, ডাটাসহ বিভিন্ন জাতের শাকসবজির আবাদ করা হয়েছে। এসব ভাসমান বাগান থেকে চাষিরা ইতোমধ্যে শাকসবজি আহরণ শুরু করেছেন। পার্শ্ববর্তী চংশোলাকিয়া এলাকার কৃষক ফয়েজউদ্দিন, রাজ্জাকসহ বেশ কজন চাষিকে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সহায়তা দেওয়ার মাধ্যমে এসব বাগান গড়ে তোলা হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শফিকুর ইসলাম জানান, সদর উপজেলার মহিনন্দ এলাকার পাশাপাশি মারিয়া ইউনিয়নে এবং কটিয়াদী, করিমগঞ্জ, বাজিতপুরসহ বিভিন্ন উপজেলার জলাশয়েও ভাসমান সবজির আবাদ করা হয়েছে। পচা কচুরিপানা জড়ো করে এসব ভাসমান বাগান বা বেড তৈরি করা হয়েছে।
তিনি জানান, প্রতিটি বেডের দৈর্ঘ্য ৫০ ফুট, প্রস্ত ৪ ফুট এবং উচ্চতায় ৪ ফুট মাপের। এসব বাগানে শীতকালীন শাকসবজিরও আবাদ করা যায়। শাকসবজির পাশাপাশি মসলা জাতীয় ফসলও আবাদ করা যায়। কোন রকম সার প্রয়োগ ছাড়াই এসব ভাসমান বাগানে শাকসবজির আবাদ করা হয়। ফলে ভাসমান বাগানের শাকসবজি বেশ সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যসম্মতও বটে। আর বিলের পানি যখন শুকিয়ে যাবে তখন এসব বেডের পচা কচুরিপানা অন্যান্য জমির জৈব সার হিসেবে ব্যবহৃত হবে।
জানা যায়, সাধারণত আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে বর্ষার শুরুতে এসব বেড তৈরি করা হয়। যেসব এলাকায় পর্যাপ্ত কচুরিপানা পাওয়া যায় না, সেখানে অন্যান্য আগাছা বা পাতা-লতা স্তূপ করেও ভাসমান সবজি বেড হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। ভাসমান বাগানের সবজি খুব দ্রুত বাড়ে। অল্প দিনের মধ্যেই এসব শাকসবজি আহরণ করে বাজারজাত করা যায়। এসব শাকসবজি দেখতে বেশ তরতাজা ও আকর্ষণীয় হয় বলে ক্রেতারাও আকৃষ্ট হন।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ