আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
একটা লাল ব্যাগ, সেটাই ছিল সংকেত। এই সংকেত দিয়ে সহিংসতা ছড়িয়ে আদালত থেকে জেলে যাওয়ার পথে পালাতে চেয়েছিলেন গুরমিত রাম রহিম সিং। গত শুক্রবার সহিংসতার পর দিল্লিতে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহকে দেয়া প্রতিবেদনে এ কথা জানান হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর।
পদত্যাগের সম্ভবনা উড়িয়ে দিয়ে আদালতের নির্দেশ পালন করতে পেরে এবং নিজের কাজে তিনি সন্তুষ্ট বলে জানিয়েছেন খট্টর। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘গুরমিত বুঝেছিলেন, ধর্ষণ মামলায় তিনি দোষী সাব্যস্ত হবেন। তাই একটি লাল ব্যাগে জামাকাপড় এনেছিলেন। রায় ঘোষণার পরে আদালত কক্ষে ব্যাগটি চেয়ে পাঠান ডেরা প্রধান। সঙ্গে সঙ্গেই কোর্ট থেকে সেই খবর ছড়িয়ে পড়ে। পঞ্চকুলা ও সিরসায় শুরু হয় পরিকল্পিত তাণ্ডব।’
আসলে ‘লাল ব্যাগ চেয়ে পাঠানো’ অর্থ হচ্ছে খারাপ সংকেত। অর্থাৎ সহিংসতা শুরু করো। প্রায় একই সময়ে ডেরার বাছাই করা সন্ত্রাসীদের মোবাইলে এসএমএসে পৌঁছায় একটি সাঙ্কেতিক বার্তা। সেখানে বলা হয়, ‘টোম্যাটো ফোড়ো’।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের সন্দেহ, সম্ভবত সিরসায় ডেরার সদর দপ্তর থেকেই পাঠানো হয়েছিল সেই এসএমএস। আর এসব সংকেতের আড়ালেই তৈরি ছিল রাম রহিমের পালিয়ে যাওয়ার ছক। ৮০টিরও বেশি গাড়ির বহর নিয়ে আদালতে এসেছিলেন ডেরা প্রধান। অস্ত্র, আগুন জ্বালানোর সরঞ্জামে ঠাসা গাড়িগুলো অপেক্ষা করছিল আদালত থেকে জেলে যাওয়ার রাস্তায়। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, গুরমিতকে নিয়ে পুলিশের গাড়িবহর আসা মাত্রই ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দেওয়া ছিল গাড়িতে থাকা সন্ত্রাসীদের। সেই হুলস্থুলের মধ্যেই পগার পার হবেন গুরমিত।
হরিয়ানা পুলিশের আইজি কে কে রাও নাশকতার আশঙ্কা থেকে মাত্র চারটি গাড়ি নিয়ে মাঝ রাস্তায় হঠাৎ কনভয়ে গুরমিতকে নিয়ে উল্টো পথ ধরেন। কিন্তু সেই সময়েই বেঁকে বসেন জেড প্লাস নিরাপত্তা পাওয়া ধর্মগুরুর রক্ষীরা। যদিও তারা পুলিশেরই কম্যান্ডো, কিন্তু ‘বাবা’-র অনুগত। হাতে একে-৪৭ ধরা এই কম্যান্ডোরা গাড়ি ঘোরানোয় বাধা দিলে অন্য পুলিশরা তাদের পিটিয়ে নিরস্ত করেন।
গাড়ি ঢুকে পড়ে সেনা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায়। এক কর্নেলের সঙ্গে কথা বলে রেখেছিলেন আইজি। সেখান থেকেই গুরমিতকে নিয়ে রোহতকের জেলের দিকে উড়ে যায় হেলিকপ্টার। আইজি রাও বলেন, ‘সহিংসতা ছড়িয়ে ভিড়ের মধ্যে পালানোর সব ছকই কষা ছিল। কম্যান্ডোরা গুলি চালালে আরও ক্ষতি হতে পারত।’
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ