নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি অভিযোগ করেছে টিকেট অব্যবস্থাপনা, কুলিদের হয়রানী, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য, টিকেট কালোবাজারী, ইজারাদারদের দৌরাত্মে ঈদযাত্রায় নৌ-পথের যাত্রীরা পদে পদে চরম হয়রানীর শিকার হচ্ছেন। এবারের ঈদে সারাদেশের নৌ পথে যাতায়াতের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ শেষে মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই অভিযোগ করেন। বিবৃতিতে বলা হয়, এবার ঈদুল আজহায় ঢাকাসহ সারাদেশে প্রায় ১ কোটি ১৫ লাখ মানুষ দেশের বিভিন্ন নৌ পথ ব্যবহার করছেন।
গত কয়েকদিন ধরে সংগঠনের সেচ্ছাসেবকরা ঢাকার সদরঘাট, বরিশাল নদীবন্দর, চাঁদপুর নদীবন্দর, নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দর, মাওয়া ফেরিঘাট, পাঠুরিয়া-দৌলদিয়া ফেরিঘাট, কুমিরা-গুপ্তছড়া, ভোলার মজুচৌধুরী ঘাট, কুতুদিয়ার মগনমা ঘাটসহ প্রায় ৫০টি ঘাট, নদীবন্দর ও নৌরুটে যাত্রী সেবা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন। এতে দেখা গেছে, এইসব ঘাটে কুলিরা যাত্রীদের লাগেজ-ব্যাগেজ নিয়ে টানাটানি ও অতিরিক্ত অর্থ আদায়কে কেন্দ্র করে যাত্রী সাধারণের সাথে চরম দুর্ব্যবহারের ঘটনা ঘটছে। এই ঘটনায় কোথাও কোথাও হাতাহাতি মারামারি পর্যন্ত রূপ নিচ্ছে। ঈদকে কেন্দ্র করে যাত্রী সাধারণের ঘাটে খেয়া পারাপারে ৫০ পয়সার টোলের ক্ষেত্রে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত টোল আদায়ের মহোৎসব চলছে। টিকেট অব্যবস্থাপনা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য, টিকেট কালোবাজারীসহ লঞ্চের ডেকে চাদরের ব্যবসা চরম আকার ধারণ করেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এছাড়াও যাত্রী ধারণ ক্ষমতার কয়েকগুণ বেশি যাত্রী নিয়ে চরম ঝুঁকিপূর্ণভাবে কিছু কিছু লঞ্চ চলাচল করতে দেখা গেছে। বর্তমানে যাত্রীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থাতে চরম উদাসীনতা লক্ষ্য করা গেছে। যেমন লঞ্চে জীবন রক্ষাকারী লাইফ জ্যাকেট যাত্রীর প্রয়োজনের তুলনায় কম রাখা, এছাড়াও অনান্য নিরাপত্তামূলক সামগ্রী যাত্রীর তুলনায় অধিকাংশ লঞ্চে ৫ শতাংশও পাওয়া যায়নি। তবে কিছু কিছু লঞ্চ তাদের শর্ত পূরণ করেই যাত্রী পরিবহন করতে দেখা গেছে।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির দাবি, দেশের সড়ক মহাসড়কে যানজটের কারণে যাত্রী সাধারণ নৌপথকে গুরুত্ব দিলেও সদরঘাটসহ দেশের বিভিন্ন লঞ্চঘাট ও বিভিন্ন নদীবন্দরে দেখা গেছে, কোনও কোনও লঞ্চ ১ থেকে ৩ ঘন্টা দেরিতে ছাড়ছে। এবার প্রথম কাউন্টার সিস্টেমে টিকিট বিক্রির কথা থাকলেও স্থাপিত কাউন্টার গুলোতে কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আবার নতুন নিয়মে টিকেট ছাড়া লঞ্চে আরোহনের সুযোগ না থাকায় যাত্রীরা চরম বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। এছাড়াও পণ্যবাহী লঞ্চে ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী বহন, পশুবাহী লঞ্চে যাত্রী বহন এবং যাত্রীবাহী লঞ্চে পশু বহনের কারণে যাত্রী নিরাপত্তা চরম ঝুঁকিতে পড়ছে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি