নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় এক পুলিশ সদস্যসহ চারজন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার ভোররাত থেকে সকাল পর্যন্ত রাজশাহী মহানগরী ও জেলার গোদাগাড়ী এবং মোহনপুরে এসব দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় পুলিশের এক উপপরিদর্শকসহ (এসআই) ছয়জন আহতও হয়েছেন।
নিহতরা হলেন- জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) সদস্য সেলিম রেজা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামের জালাল হোসেনের ছেলে জাহিদ হাসান, রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার উজানপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল আজিজের ছেলে আক্তার আলী এবং তানোর উপজেলার মুণ্ডুমালা চুনিয়াপাড়া গ্রামের মিনারুল ইসলামের স্ত্রী রুবিনা খাতুন।
আহতরা হলেন- জেলা ডিএসবির এসআই আবদুল কাইয়ুম, নিহত রুবিনার স্বামী মিনারুল ইসলাম, তার মেয়ে ফাতেমা খাতুন, রুবিনার মামাতো বোন সানজিদা খাতুন এবং দুই মোটরসাইকেল চালক আহসান হাবিব এবং জিয়ারুল ইসলাম। তাদের সবাইকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম মাসুদ পারভেজ জানান, নিহত ডিএসবি সদস্য সেলিম রেজা জেলার পবা থানা জোনে কর্মরত ছিলেন। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে একটি মোটরসাইকেলে চড়ে সেলিম রেজা ও এসআই আবদুল কাইয়ুম রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়ক হয়ে মোহনপুরের কেশরহাট যাচ্ছিলেন। এ সময় মোহনপুর উপজেলা সদরে বিপরিতমুখী একটি বাসের সঙ্গে তাদের মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে এই দুই পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হন। পরে তাদের রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে নেয়ার পর সেলিম রেজা মারা যান। দুর্ঘটনার পর ঘাতক বাসটি জব্দ করা গেলেও পালিয়ে গেছেন এর চালক ও হেলপার।
এদিকে গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিপজুর আলম মুন্সি জানান, নিহত জাহিদ হাসান একটি ট্রাকের হেলপার ছিলেন। মঙ্গলবার ভোররাত তিনটার দিকে তাদের ট্রাকটি উপজেলা সদর ডাইংপাড়া মোড়ে দাঁড়িয়েছিল।
জাহিদ তখন রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কে ট্রাকের পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় পেছন থেকে রাজশাহীমুখী একটি ট্রাক এসে জাহিদকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে জাহিদ গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে গোদাগাড়ী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে জাহিদ মারা যান। দুর্ঘটনার পর ঘাতক ট্রাকের চালক ও হেলপার ট্রাক ফেলে পালিয়েছেন। পরে ট্রাকটি জব্দ করে থানায় নিয়েছে পুলিশ।
এরপর ভোর ৬টার দিকে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কে গোদাগাড়ীর উজানপাড়া এলাকায় অজ্ঞাত একটি গাড়ির চাপায় আক্তার আলী গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাকেও উদ্ধার করে গোদাগাড়ী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃদ্ধ আক্তার আলী মারা যান।
রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমান উল্লাহ জানান, বেলা ১১টার দিকে নগরীর শিরোইল এলাকায় এক দুর্ঘটনায় রুবিনা খাতুন নামে তানোরের ওই নারী মারা গেছেন। তিনি অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন। ওই অটোরিকশায় তার স্বামী, মেয়ে এবং খালাতো বোনও ছিল। তারা আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ওসি জানান, রাজশাহী রেলস্টেশনের সামনে বেলা ১১টার দিকে একটি বাস, একটি অটোরিকশা এবং দুটি মোটরসাইকেলের মধ্যে চতুর্মুখি সংঘর্ষ ঘটে। এতে দুই মোটরসাইকেলের চালক আহসান হাবিব ও জিয়ারুল ইসলামসহ অটোরিকশার সব যাত্রী আহত হন। এ সময় আশপাশের লোকজন তাদের রামেক হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে নেয়ার পর রুবিনা খাতুন মারা যান।
সংশ্লিষ্ট থানার ওসিরা জানিয়েছেন, নিহতদের লাশ হাসপাতাল থেকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। এসব দুর্ঘটনার ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ