গাজীপুর প্রতিনিধি:
গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে রোববার রাতে মা বঙ্গরাণী ফুটফুটে একটি শাবকের জন্ম দিয়েছে। আবদ্ধ পরিবেশে বন্যহাতির শাবক প্রসব এদেশে এটিই প্রথম। বিষয়টি নিশ্চিত করে পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন মো. নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এদেশের জন্য এটি একটি বিরল দৃষ্টান্ত। বাচ্চাসহ মা হাতিটি আলাদা করে রাখা হয়েছে। বাচ্চাটি মায়ের তত্ত্বাবধানেই রয়েছে। মায়ের সঙ্গে বাচ্চাটি ঘুরে বেড়াচ্ছে। মো. নিজাম জানান, দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ২০১৩ সালে ৬টি বন্যহাতি এ সাফারি পার্কে এনে পোষ মানানো হয়। এদের মধ্যে দুইটি পুরুষ ও ৪টি মাদি। এত বছর পরে রোববার রাত পৌণে ১১টার দিকে হাতিটি পার্কে প্রথম শাবক প্রসব করলো । এনিয়ে এ সাফারি পার্কে হাতি পরিবারের সদস্য সংখ্যা হলো ৭। এরআগে এদেশের কোনো পার্ক বা চিড়িয়াখানায় আবদ্ধ পরিবেশে হস্তিশাবক প্রসবের তথ্য নেই। শাবকটির প্রসবকালীন ওজন ছিল প্রায় ৬০ কেজি। একটি পূর্ণবয়স্ক হাতির সাধারণত চার থেকে পাঁচ হাজার কেজি ওজন হয়। ১৮-২০ বছরে হাতি প্রজনন সক্ষম হয়। এদের গর্ভকালীন সময় ২০-২২ মাস।
সাধারণত হাতি চার-পাঁচ বছর পর একটি করে বাচ্চা প্রসব করে। হাতির সামনের দুই পায়ের মাঝখানে বক্ষদেশে স্তন থাকে। শাবক সাধারণত সাড়ে তিন থেকে চার বছর পর্যন্ত মায়ের দুধ পান করে। হাতির গড় আয়ু ১০০ বছর। তিনি আরও জানান, সার্বক্ষণিক মা ও শাবক হাতিটি তার নজরদারিতে রয়েছে। সেখানে পর্যটকদের যাতায়ত সীমিত রাখা হয়েছে। মা হাতিটিকে প্রতিদিন ২০ কেজি কলা গাছ, ৫০ কেজি মিস্টি কুমড়া, ৫০ কেজি আখ, ১০ কেজি গাজর, ৩ কেজি জাউ (ভাত) সহ তৃণ জাতীয় খাবার দেয়া হচ্ছে। প্রায় চার বছর পর থেকে বাচ্চা হাতি প্রাকৃতিক খাবার খাওয়া শুরু করে। মা হাতি যাতে অপুষ্টিতে না ভোগে তার জন্য তাকে প্রয়োজনীয় খাবার ও ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে এবং তাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, কোনো চিড়িয়াখানা বা সাফারি পার্কে আবদ্ধ পরিবেশে (ক্যাপটিভিটি) হাতির শাবক প্রববের ঘটনা এদেশে একটি বিরল ঘটনা। মা হাতি ও শাবক দুই-ই সুস্থ আছে। তবে তাদের বিশেষ পরিচর্যায় রাখা হয়েছে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি