আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বুধবার রাত ২টার দিকে গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনে উত্তাল দার্জিলিংয়ে এবার সুখিয়াপোখরি থানা লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটেছে। বিস্ফোরণে থানা চত্বরের বেশ কয়েকটি দোকান পুড়ে গেছে। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। গোটা এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ ঘটনায় ফের ইন্টারনেট, টেলিফোন যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে। এদিকে ঘটনার দায় মোর্চার উপর চাপিয়ে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব মন্তব্য করেন, ‘পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে যখন আলোচনায় বসার ডাক দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তখন এই ধরণের ঘটনা সত্যিই লজ্জাজনক। এই ঘটনায় আবার প্রমাণ করল, মোর্চা পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে চাই না। আগুন জ্বালাচ্ছে। এটা মেনে নেয়া হবে না।’ সব অভিযোগ খারিজ মোর্চা নেতা কল্যাণ দেয়ান বলেছেন, ‘এই ঘটনার পেছনে কারা দায়ী, তা খতিয়ে দেখুক পুলিশ। মোর্চা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী। সংবিধানের উপর আমাদের আস্থা আছে। এই ঘটনা ঘটিয়ে মোর্চাকে বদনাম দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।’ লাগাতার থানা লক্ষ্য করে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় বেশ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন, নিচু তলার পুলিশ সদস্যরা। থানার বাইরে পা রাখতে নিচু তলার পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ভয় কাজ করছে বলেও জানা গেছে। লাগাতার এই ঘটনায় বেশ চিন্তায় পড়েছেন প্রশাসনের কর্তারা। পাহাড়ে কীভাবে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক পৌঁছে গেল? কারা বিস্ফোরক সরবরাহ করল? বিস্ফোরণের উদ্দেশ্য ভাবাচ্ছে পুলিশ কর্তাদের। কেননা, গোয়েন্দারা এর আগেও পাহাড়ে জোড়া বিস্ফোরণের ঘটনায় মাওবাদী যোগের সন্ধান পেয়েছেন। কিন্তু, পাহাড়ে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক এল কীভাবে? গোয়ান্দারা তা নিয়ে এখনো কিছু জানাতে পারেননি।
বুধবার গভীর রাতের এই ঘটনার পর পাহাড়ে নতুন করে বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তেজনা। পাহাড় ইস্যুতে নবান্নে যখন শান্তি বৈঠকের ডাক দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী, ঠিক তখনই ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় বৈঠকের উদ্দেশ্য নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মোর্চাকে চাপে ফেলে জিএনএলএফের সঙ্গে মমতার শান্তি বৈঠক নিয়েও পাহাড়ে বদলাতে শুরু করেছে রাজনৈতিক সমীকরণ। জিএনএলএফের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে দেয়া চিঠির ভিত্তিতেই এই বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে জানা গেছে। চিঠিতে পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য রাজ্যের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাওয়ার আর্জি জানানো হয় জিএনএলএফের পক্ষ থেকে। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শান্তি বৈঠকের কথা ঘোষণা করেন।
তবে, পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে শুধুমাত্র জিএনএলএফের সঙ্গে রাজ্যের বৈঠক আদৌও সমস্যা সমাধান হবে কি না তা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। কারণ, এর আগেও তিনবার পাহাড় ইস্যুতে ডাকা সর্বদল বৈঠক বিফলে যায়। পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে জিএনএলএফ আলোচনায় বসতে চাইলেও এখনো পাহাড়ের রাজনৈতিক দলগুলো তাদের অবস্থান নিতে পারেনি। মোর্চা কিংবা জন আন্দোলন পার্টির সদস্যরা এই শান্তি বৈঠকে যাবেন কি না তাও স্পষ্ট নয়।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি