নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, তৎকালীন বিএনপি সরকারকে বিভ্রান্ত করতেই ২১ আগস্টের হামলা সুপরিকল্পিত ঘটিয়েছে আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) ও আওয়ামী লীগের শুভাকাঙ্খীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
রিজভী বলেন, ‘২০০৪ সালে আওয়ামী লীগকে মুক্তাঙ্গণে জনসভা করতে বলা হলেও তারা সেখানে না করে নিজেদের রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে জনসভার আয়োজন করে। তারপর সন্ত্রাসী হামলা। তাই আমরা মনে করি, এ ঘটনা পরিকল্পিত।’ বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় জাতীয়তাবাদী ওলামা দল এ দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে।
রিজভী বলেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে হামলা হয়েছে এবং হচ্ছে কিন্তু সেখানে তো কেউ রাষ্ট্র পরিচালনায় থাকা সরকারকে দায়ী করেনি। বরং সেখানে সন্ত্রাসী ও উগ্রবাদীকে দায়ী করেছে। সরকার কিংবা বিরোধীদল কেউ কাউকে দোষারোপ করেনি। বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনায় থাকাকালীন ২১ আগস্টে হামলা হয়েছে বলে তারা (আওয়ামী লীগ) বিএনপিকে দায়ী করেছে।’
বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, ‘শুধু তাই নয়, আওয়ামী লীগের আন্দোলনের ফসল মঈন উদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকারও বিএনপি নেতা তারেক রহমানকে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় জড়াতে পারেনি। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে তাদের মনোনীত ব্যক্তিকে দিয়ে তারেক রহমানের নাম চার্জশিটে অন্তর্ভূক্ত করানো হয়েছে।’
‘টার্গেট হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও বিএনপির ভাবমূর্তিকে খাটো করা। এবং তার (শেখ হাসিনা) প্রতি সহানুভূতি বাড়ানো’, মন্তব্য করেন রিজভী।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টুর প্রসঙ্গ তুলে রিজভী বলেন, ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের সাথে আত্মীয়তার কারণে বিএনপির নেতাদের যদি জেলে যেতে হয় তাহলে আওয়ামী লীগের কাছে প্রশ্ন ভয়ংকর সন্ত্রাসী শায়খ আব্দুর রহমানের শ্যালক মির্জা আজম মন্ত্রিপরিষদে থাকে কী করে? তাকে কেন গ্রেফতার করেনি। কেন কারাগারে নয়? এতেই বুঝা যায় ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনা পরিকল্পিত। এখন যদি আমরা (বিএনপি) বলি পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় আওয়ামী লীগ জড়িত। কারণ আপনারা (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতায় আসার পরপরেই এ ঘটনা ঘটেছে। সেক্ষেত্রে যত সেনা কর্মকর্তা মারা গেছেন এজন্য দায়ী আওয়ামী লীগ। এটাই তো সঠিক হবে।’
‘ষোড়শ সংশোধনীর রায় বাতিলের পর আওয়ামী লীগ উন্মাদ হয়ে গেছে’ উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘তারা প্রধান বিচারপতি ও বিচার বিভাগের উপর বিষের তীর নিক্ষেপ করছেন। এবং আওয়ামী লীগের যেসব নেতা প্রধান বিচারপতিকে পাকিস্তানে চলে যেতে বলছেন তাদের কে একটু স্মরণ করে দিতে চাই এই বলে যে, পাকিস্তানে চলে যাওয়ার ইতিহাস তো আওয়ামী লীগের (শেখ মুজিবুর রহমান) ৭১ সালে অর্পিত দায়িত্ব পালন না করে পাকিস্তান চলে যান।’
বিএনপি বন্যার্তদের পাশে ত্রাণ সামগ্রি বিতরণ করে যাচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘ত্রাণ কর্মসূচিতে সরকার বাধা দিচ্ছে। অথচ বর্ন্যাতদের কাছে সরকারের ত্রাণ পৌঁছে দেয়ার কার্যক্রম নেই।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হাফেজ মাওলানা আব্দুল মালেকের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলে, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল এবং জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, মাওলানা জসিম উদ্দিন, আলমগীর হোসেইন খলিল, মাওলানা দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ