নিজস্ব প্রতিবেদক:
ফেনী শহরের মহিপালে দেশের সর্ববৃহৎ ছয় লেনের ফ্লাইওভার নির্মাণকাজ অবশেষে গতি পেয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে উদ্বোধন হবে বলে জানিয়েছেন নির্মাণ সংশ্লিষ্টরা। ইতোমধ্যে প্রায় ৮৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চলতি সালের নভেম্বর মাসের শেষ দিকে নির্মাণকাজ শেষ হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।
ফলে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার মেয়াদ ২০১৮ সালের জুন মাস নির্ধারিত থাকলেও দ্রুততম সময়ে কাজ শেষ করায় নির্দিষ্ট মেয়াদের ছয় মাস আগেই ডিসেম্বরে নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারটি উদ্বোধন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বাইপাস অংশ ফেনীর মহিপালে বিশাল ফ্লাইওভার ক্রমেই দৃশ্যমান হচ্ছে। দুটি ক্রেন গার্ডার বসাচ্ছে। শ্রমিকরাও যার যার কাজে ব্যস্ত। এটি যত দ্রুত উদ্বোধন হবে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দুর্ভোগ ও যাত্রার সময় তত কমে আসবে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীর যোগাযোগের মাঝামাঝি এলাকা ফেনীর মহিপালে ২০১৫ সালের নভেম্বরে শুরু হয় ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজ। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৯ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আবদুল মোনেম লিমিটেড।
এজন্য মহাসড়কের চাড়িপুর রাস্তার মাথা সংলগ্ন স্থানে সেনাবাহিনীর নিজস্ব ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। দিন-রাত করে প্রতিদিন ৪৫০জন শ্রমিক চালিয়ে যাচ্ছে এ কর্মযজ্ঞ।
মহিপালের প্রবেশপথ চাড়িপুর রাস্তার মাথা থেকে মহাসড়কের ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ অফিস পর্যন্ত নির্মিত হবে ৬৬০ মিটারের ফ্লাইওভার। ইতোমধ্যে ৫১০ মিটারের কাজ শেষ হয়েছে। ২০টি পিলারের সবকটি নির্মিত হয়েছে। দুটি এপার্টমেন্টের একটির কাজ শেষ হয়েছে। অপরটিও শেষ হওয়ার পথে।
১৩২টি গার্ডারের মধ্যে ১২২টি বসানো হয়েছে। আরো ১০টি গার্ডার তৈরি রয়েছে। গার্ডার স্থাপনে একশ টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ও ৩৫ টন ক্ষমতার একটি হাইড্রোলিক ক্রেন কাজ করছে। পিলার ক্যাপ ১০টির মধ্যে নয়টি শেষ হয়েছে। ৫০৬টি ক্রস গার্ডারের মধ্যে ৪০৭টি স্থাপন হয়েছে।
ফ্লাইওভারের দুই পাশে দুই হাজার ২১০মিটার ড্রেনের মধ্যে এক হাজার পাঁচশ মিটারের কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া ফ্লাইওভারের নিচে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের এক হাজার ৩২০মিটারের দুটি রাস্তাও নতুন করে ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। সড়ক দুটি ঢাকা ও চট্টগ্রাম অভিমুখী গাড়ি চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করা হয়েছে।
উক্ত প্রকল্পের প্রকৌশলী মিজানুল হক জানান, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। তবে নির্ধারিত সময়ের আগে নভেম্বরেই শেষ করা হতে পারে এর কাজ। সে অনুযায়ী ডিসেম্বর মাসে উদ্বোধন করা হতে পারে দেশের প্রথম ছয় লেন ফ্লাইওভারটি।
জানতে চাইলে সেতু মন্ত্রণালয়ের এসডব্লিউবি’র পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল রেজাউল মজিদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ১৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ হবে। যথাসময়ে কাজ করতে বরাদ্দ আরো বাড়ানো হতে পারে।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ