সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জ জেলার মাঠে মাঠে এখন পাট কাটা, জাগ দেয়া এবং পাট শুকানো নিয়ে চাষীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। জেলার হাট-বাজারে নতুন পাট উঠতে শুরু করেছে। তবে শুরুতেই দাম নিয়ে চাষীদের রয়েছে হতাশা। সরেজমিনে বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে ১৫’শ থেকে ১৭’শ টাকায়। এবার মোটামুটি অনুকূল আবহাওয়া থাকায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু শেষের দিকে বন্যার পানিতে যেমন ক্ষতি হয়েছে, আবার উপকারও হয়েছে। পাট জাগ দিতে হাতের কাছেই পানি আর পানি। চাষীরা জানান, জমিতে পানি থাকায় পাটগাছ কাটা শ্রমিকদের অনেক বেশি মজুরি দিতে হচ্ছে।
বেলকুচি চরের কৃষক আলফাজ উদ্দিন বলেন, এই মৌসুমে আমি ৪ বিঘা জমিতে পাট লাগিয়েছি। ফলনও ভালো হয়েছে। আমি এ পর্যন্ত হাটে দুইবার পাট বিক্রি করেছি। পাটের দাম কম হওয়ায় বিপাকে পড়েছি। কামারখন্দ ইউনিয়নের দমদমা গ্রামের কৃষক এফাজ আলী বলেন, এবার মুষলধারে বৃষ্টি ও বন্যার পানির কারণে কিছুটা সমস্যায় পড়েছিলাম। তবে পাটের ফলন ভালো হওয়ায় তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। পাট কেটেছি জাগও দিয়েছি। আশা করছি ভালো দামও পাবো। সীমান্ত বাজারের পাট ব্যবসাযী রফিকুল ইসলাম জানান, নতুন পাট বাজারে উঠতে শুরু করেছে। বিভিন্ন কল-কারখানায় এবার পাটের মূল্য নির্ধারণ করেছে প্রতি মণ ১৭’শ থেকে ১৭৫০টাকা। মোকাম থেকে ভালোমানের পাট কিনতে হয় প্রতি মণ ১৭০০টাকায়। আবার কেয়ারিং তো আছেই। এবার নতুন পাটের আমদানি বেশি হবে।
শ্রমিক সরদার আসলাম উদ্দিন বলেন, এ মৌসুমের শুরুতেই পাটের আমদানি বেশি দেখা যাচ্ছে। আগাম চাষের পাট হাট-বাজারে উঠতে শুরু করেছে। এর মধ্যেই আমরা বোঝা থেকে শুরু করে ট্রাক লোড আনলোড করছি। এখান থেকে বিভিন্ন জায়গার গাড়িতে পাট বোঝাই দিচ্ছি। এদিকে পাট ব্যবসায়ীরা জানান, এ অঞ্চলের চাষীরা খুব যত্ন নিয়ে পাট ধোয়ার কাজ করে। এতে করে অন্যান্য জেলার চেয়ে এ জেলার পাটের মান ও রং ভালো হয়। সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি অফিসার মো. আরশেদ আলী জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২১ হাজার ২২০ হেক্টর, সেখানে আবাদ হয়েছে ১৯ হাজার ৭০০ হেক্টর। তবে এবার পাটের উৎপাদন ভালো হয়েছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সবসময় মনিটরিং করা হয়েছে। সিরাজগঞ্জ জেলার পাটের মান ভালো।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি