নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীর তানোরে মৎস্য খাতে অপ্রত্যাশিত উন্নয়ন হয়েছে। এলাকার পিছিয়ে পড়া অবহেলিত হতদরিদ্র মৎস্যজীবীদের জীবন-মান উন্নয়নের জন্য বিলকুমারি বিলে প্রায় দু’ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩টি মৎস্য অভায়াশ্রম ও ১টি কজওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও এসব মৎস্যজীবীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য বিল এলাকায় চালু করা হয়েছে নতুন নতুন সব প্রকল্প এতে প্রায় সহস্রাধিক মৎস্যজীবী পরিবার এর সুফল ভোগ করছে। আবার প্রায় শতাধিক ভূমিহীন পরিবার সরকারি খাস জমিতে মাথা গোজার ঠাই পেয়েছেন। এদিকে এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে একদিকে হতদরিদ্র মৎস্যজীবীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, অন্যদিকে সুদিন ফিরেছে মৎস্যজীবী ও মৎস্যচাষীদের মধ্যে। প্রকৃত মৎস্যজীবীরা সমিতির মাধ্যমে এসব বিলে মাছ চাষ করে জীবীকা নির্বাহ ও সুফল ভোগ করছেন। এসব কর্মকান্ড সম্পন্ন করার ফলে এলাকার হতদরিদ্র ও ভূমিহীন মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন (উন্নতি) হয়েছে। অপরদিকে উপজেলার প্রায় সহস্রাধিক সরকারি খাস পুকুর-জলাশয় মৎস্যজীবী বেকার যুবক, সরকারি নিবন্ধকৃত সমবায় সমিতি ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে স্বল্পমূল্যে ইজারা দেওয়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়ে কাজ শুরু করেছে মৎস্য বিভাগ। হতদরিদ্র ও ভূমিহীন এসব মৎস্যজীবীদের উন্নয়নে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেছেন। সরকারের নেয়া এসব কার্যক্রমের ফলে উপজেলার মৎস্যজীবীদের জীবনযাত্রার মান ও অর্থ উপার্জনের উৎস্য বহুগুণে বেড়েছে ফলে এলাকার বেশিরভাগ মৎস্যজীবী হয়েছেন স্বাবলম্বী। অত্যন্ত বিচক্ষণ, রাজনৈতিক দূরদর্শিতা সম্পন্ন, প্রচার বিমূখ ও জনবান্ধব রাজনৈতিক নেতা ওমর ফারুক চৌধূরী এলাকার হতদরিদ্র ও ভূমিহীন মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের ভাগ্যর পরিবর্তনের জন্য এখানো নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন।
জানা গেছে, তানোর ও মোহনপুর উপজেলার সীমান্ত সংলগ্ন বিলকুমারি বিলের বিলপাড়ের বিভিন্ন এলাকায় বসবাসরত মৎস্যজীবীরা সারা বছর বিলের জেগে ওঠা খাস জমিতে একটি মাত্র বোরো ফসলের আবাদ করতেন। তারা বছরে ছয় মাস চাষাবাদ করতেন এবং বাঁকি ছয় মাস বিলে মাছ আহরণ করে জীবীকা নির্বাহ করতেন। কিšত্ত বিগত ৯০ দশকের পর থেকে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রতিবছরই শুস্ক মৌসুমে বিলের পানি শুকিয়ে বিল মরা খালে পরিণত হয়। বিলে পানি না থাকায় মাছ আহরণের কোনো সুযোগ ছিলনা এ সময় হতদরিদ্র ও ভূমিহীন মৎস্যজীবী পরিবারগুলোর ওপর নেমে আসে চরম দূর্দীন। মাছ আহরণের উৎস্য বন্ধ ও বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকায় অনেকেই বংশপরস্পর পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় জড়িয়ে পড়েন। অধিকাংশ মৎস্যজীবী পরিবার-পরিজন নিয়ে কোনো রকমে ধুঁকে ধুঁকে চরম মানবেতর জীবন-যাপন করতে থাকেন। এলাকার মৎস্যজীবীরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সরকারের নিকট দাবি জানায়, বিলকুমারি বিল পুনঃখনন, মৎস্য অভায়াশ্রম ও কজওয়ে নির্মাণের। বিভিন্ন নির্বাচনের সময়ে প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণার সময় মৎস্যজীবীদের এসব দাবি পূরুণের আশ্বাষ দিয়ে ভোট চাইলেও নির্বাচিত হওয়ার পরে কেউই আর সেসব কথা মনে রাখেনি ও মৎস্যজীবীদের এসব দাবি পূরুণে এগিয়ে আসেনি। তবে ব্যতিক্রম ছিলেন, একজন তিনি স্থানীয় সাংসদ ও সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী ওমর ফারুক চৌধূরী। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার সময় তিনি মৎস্যজীবীদের প্রতিশ্র“তি দিয়েছিলেন তিনি যদি নির্বাচিত হন তাহলে মৎস্যজীবীদের ভাগ্যেউন্নয়নের জন্য তিনি মৎস্যজীবীদের দাবি পূরুণে নিরলসভাবে চেস্টা করবেন। তিনি নির্বাচিত হবার পরে নির্বাচনী প্রতিশ্র“তি পূরুণের জন্য প্রাণপন চেষ্টা ও নিরলস পরিশ্রম করে এসব গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছেন। তাঁর প্রচেষ্টায় ইতি মধ্যে তানোরের বিলকুমারি বিলে প্রায় দু’কোটি টাকা ব্যয়ে ৩টি মৎস্যঅভায়াশ্রম ও একটি কজওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে মাছচাষ করে এলাকার মৎস্যজীবীরা তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে শুরু করেছে বেশিরভাগ মৎস্যজীবী পরিবার এখন স্বাবলম্বী হয়েছেন। এ ব্যাপারে তানোর বিলকুমারি মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি দর্শনাথ হালদার বলেন, আমরা মহাজোট সরকার, স্থানীয় সাংসদ ও সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের নিকট চিরকৃতজ্ঞ। এসব কর্মসূচী গ্রহণের ফলে আমাদের মৎস্যজীবী পরিবারগুলোর চরম দূর্দীন লাঘব হয়েছে। আমরা এখন স্বাবলম্বী হয়েছি।
দৈনিকদেশজনতা/এন এইচ