নিজস্ব প্রতিবেদক:
ইন্টারনেট ও মোবাইলে লোভনীয় প্রাপ্তির মেসেজ দিয়ে বিদেশি একটি প্রতারক চক্র লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ সব কাজে দেশীয় কিছু লোককে ব্যবহার করছে তারা। মঙ্গলবার রাতে ৫ নাইজেরিয়ানসহ এ চক্রের ৭ প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদর দফতরে বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটিই জানালেন পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. আহসান হাবিব পলাশ।
পলাশ আরো জানান, কয়েকজন ভিকটিমের মামলা তদন্তের কাজ করতে গিয়ে প্রতারক চক্রের একটি দলকে চিহ্নিত করা হয়। মানিকগঞ্জ, গাজীপুর ও ঢাকা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৫ নাইজেরিয়ানসহ এ চক্রের মোট ৭ জন প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতাররা হলেন—ফ্রেড আমাহ এগ (৪২), এযুয়েগু কেলেচি মুসা (৩৭), জশলিয়া মিচেল (৩৬), অকরো অস্টিন (৩০), আগওয়া রেজিনাল্ড (৩৮), জুয়েল রানা (৩৩) ও সাহেরা বেগম (৩৬)। এ সময় গ্রেফতারদের কাছ থেকে ৪টি ল্যাপটপ, ১১টি মোবাইল ফোন, দেশি-বিদেশি সিম ১২টি, মডেম ৬টি, নগদ ১ লাখ ১৯ হাজার টাকা ও কিছু ডলার উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আহসান হাবিব পলাশ আরো জানান, গ্রেফতার প্রতারকরা অনেকদিন ধরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বেকার যুবক, অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবীদের ইমেইল ও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে লোভনীয় অফার দিয়ে ফাঁদে ফেলে। তারপর তাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। বিভিন্ন ধরনের বার্তাগুলোর মধ্যে কোকাকোলা লটারি, ইউনাইটেড ন্যাশন পুরস্কার, আইসিসি টুর্নামেন্ট পুরস্কার, ইউএনডিপি পুরস্কারের মতো আকর্ষণীয় ও লোভনীয় অফার করে থাকে।
পুলিশের বিশেষ তদন্ত সংস্থার এ কর্মকর্তা আরো বলেন, প্রতারক চক্রটি ১০০ মানুষের কাছে বার্তাটি পাঠিয়ে যদি ১০ জনও রিপ্লাই করে তাদের নিয়েই কাজ শুরু করে চক্রটি। এ ক্ষেত্রে সুন্দরী মেয়েদের ছবিও ব্যবহার করে থাকে। সুন্দরী মেয়েরাই ফেসবুকে ক্লাইন্ডদের লোভনীয় প্রতারণার ফাঁদে ফেলে টাকা পয়সা নিয়ে উধাও হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে প্রতারক চক্রটি অনেক মোবাইল সিম ব্যবহার করে থাকে। এমনকি তাদের অফিসের কাগজপত্রও ভুয়া থাকে। টাকা পয়সা লেনদেন করে দেশীয় প্রতারকের মাধ্যমে। মূল প্রতারক বিদেশি হওয়ায় বাংলাদেশের একাউন্টধারীদের ব্যবহার করে চক্রটি। তার বিনিময়ে তাদেরও কিছু টাকা প্রদান করে থাকে। ঢাকা, মানিকগঞ্জ ও গাজীপুরের বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। এভাবেই চালিয়ে যাচ্ছে তাদের প্রতারণা। আর নিঃস্ব হচ্ছে অনেকে। গ্রেফতাররা এ দেশে স্টক লডের ব্যবসাও করে আসছে বহুদিন ধরে। তবে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেওয়াই এদের মূল কাজ। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ