২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সন্ধ্যা ৬:৫৮

নেইমারের পেছনে ১০০০ মিলিয়ন ইউরো

স্পোর্টস ডেস্ক:

অনেকেই সমালোচনা করেছেন নেইমারের বিশাল অঙ্কের চুক্তি নিয়ে। তবে ফরাসি ক্লাব অলিম্পিক লিঁওয়ের সভাপতি হুয়ান মিচেল আলাস সবচেয়ে কড়া সমালোচনাটা করলেন। ফরাসি ভদ্রলোক কোনো রাখডাক না রেখেই বললেন, নেইমারের সঙ্গে পিএসজির রেকর্ড চুক্তি বিশ্ব ক্লাব ফুটবলকে ভারসাম্যহীন করে তুলবে। তার মতে এই চুক্তি ফ্রান্সের ফুটবলের জন্য মোটেই ভালো কোনো দৃষ্টান্ত নয়। বরং এই চুক্তি দীর্ঘ মেয়াদে ফ্রান্স ফুটবলে বড় ক্ষতির কারণ হয়ে উঠবে! শুধু এই অভিযোগই নয়, অলিম্পিক লিঁওয়ের সভাপতি নেইমারের চুক্তি নিয়ে বিস্ময়কর এক তথ্যও দিয়েছেন। তার দাবি, নেইমারের পেছনে পিএসজির মোট খরচ ১০০০ মিলিয়ন বা ১ বিলিয়নে গিয়ে ঠেকবে।

পিএসজি নেইমারের রিলিজ ফি হিসেবেই বার্সেলোনাকে দিয়েছে ২২২ মিলিয়ন ইউরো। সঙ্গে চুক্তির সাইনিং মানি, এজেন্টদের বোনাস এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ মিলিয়ে নেইমারকে দলে ভেড়াতে পিএসজির মোট ৪০০ মিলিয়ন ইউরো খরচ হয়েছে বলেই খবর। এর সঙ্গে বিশাল অঙ্কের বেতন-বোনাস ও অন্যান্য সুবিধাদি মিলিয়ে আগামী ৫ বছরে নেইমারের জন্য পিএসজির বাজেট ৭০০ মিলিয়ন ইউরো!

কিন্তু হুয়ান মিচেল আলাস দাবি করেছেন, আসলে নেইমারের পেছনে পিএসজির মোট খরচের পরিমাণ ১০০০ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে! নেইমারের সঙ্গে পিএসজির বিশাল অঙ্কের চুক্তিটা উয়েফার আর্থিক ফেয়ার প্লে’র সদাচরণ নীতিতে পড়ে না। পিএসজি চুক্তিটা তাই করেছে বিশেষ পন্থায়। প্রথমে নেইমারকে করা হয়েছে ২০২২ বিশ্বকাপ পর্যন্ত পিএসজির মালিকাধিন প্রতিষ্ঠান কাতার স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্ট প্রতিষ্ঠানের শুভেচ্ছাদূত। সেই চুক্তিটা ৩০০ মিলিয়ন ইউরোর করা হয়েছে । নেইমারকে সেখান থেকেই ২২২ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে ফ্রি দেখানো হয়েছে!

ফ্রান্স ফুটবলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হুয়ান মিচেল আলাস প্রশ্ন তুলেছেন উয়েফার আর্থিক ফেয়ার প্লে সদাচরণ নীতির কার্যকারিতা নিয়েই, ‘যদি ইউরোপিয়ান পর্যায়ের মতো আর্থিক ফেয়ার প্লে সদাচরণ নীতি পুরোপুরি মানা না হয়, তা হলে ওই নীতি ফ্রান্স থেকে তুলে দেওয়ারই দরকার হবে। এই ধরনের দলবদলের ক্ষেত্রে অবশ্যই একটা নিয়ম থাকা উচিত। মিচেল প্লাতিনি উয়েফার সভাপতির পদ থেকে চলে যাওয়ার পর ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশন তাদের সবচেয়ে বড় রক্ষাকর্তাকে হারিয়েছে।’

লিওঁ সভাপতি প্রশ্ন তুলেছেন পিএসজির এই টাকা কোথায় থেকে আসে তা নিয়েও। অলিম্পিক লিওঁ ২০০২ সাল থেকে ২০০৮ পর্যন্ত টানা ৭ মৌসুমেই ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ানের শিরোপা ঘরে তুলে। কিন্তু এরপর থেকেই লিঁও যেন নিজেদের হারিয়ে খুঁজছে। পিএসজি ও মোনাকোর সঙ্গে টাকার লড়াইয়ে পেরে উঠছে না। ফলে তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গড়তে পারছে না দলও। স্বাভাবিকভাবেই মাঠের পারফরম্যান্সেও এর প্রভাব পড়ছে। সেই দিকটি তুলে ধরে লিঁও সভাপতি বলছেন, ‘আমরা যখন কাতারের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে লড়াইয়ে মুখোমুখি হই, যারা গ্যাস ও তেল রপ্তানির ব্যবসা করে বিশাল অঙ্কের মুনাফা করছে, আমরা তাদের সঙ্গে লড়াইয়ে পেরে উঠি না।’

লিঁও সভাপতি প্রশ্ন তুলেছেন তেল-গ্যাসের ব্যবসায় আয় করা মুনাফা একটা ফুটবল ক্লাবে বিনিয়োগের বিষয়টি নিয়েও, ‘এটা খুবই হতাশাজনক ব্যাপার। ক্লাব কিছুতেই মুনাফার টাকা ক্লাবের ব্যয় মেটাতে পারে না। এতে ক্লাবগুলোতে তৈরি করবে আর্থিক ভারসাম্যহীনতা। ইতিমধ্যেই এই সমস্যা দেখা দিয়েছে।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি

প্রকাশ :আগস্ট ৯, ২০১৭ ৩:০৫ অপরাহ্ণ