২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৪:২৮

পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

এক সপ্তাহের ব্যবধানে হঠাৎ করেই রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, মূলত ঈদুল আজহা সামনে রেখে বানোয়াট অজুহাতে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে।

ঈদুল আজহা হবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১ বা ২ সেপ্টেম্বর। সেদিকে লক্ষ রেখেই আগেভাগে বাজারে দাম বাড়ানো হচ্ছে সরকারি মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকার সুযোগে। এ অবস্থায় এই মুহূর্তে বাজার তদারক করার উদ্যোগ নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে ভোক্তারা।

ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ বলছেন, ভারতের কয়েকটি রাজ্যে বন্যার কারণে পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে সেখানকার ব্যবসায়ীরা আড়তে দাম বাড়িয়েছে। আবার কারো কারো দাবি, দেশের সাম্প্রতিক বন্যা এবং বেহাল রাস্তার কারণে আড়তে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ নেই। ভারতের হিন্দু বিজনেস লাইন পত্রিকার গত ৩ আগস্টের অনলাইন সংস্করণের খবর অনুযায়ী, সে দেশের কয়েকটি রাজ্যে বন্যার কারণে পেঁয়াজের দাম সাময়িকভাবে বেড়ে যাওয়ার অজুহাতে রপ্তানিমূল্য বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হলেও তা নাকচ করা হয়েছে দেশটির আন্ত মন্ত্রণালয় বৈঠকে।

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর সহসভাপতি নাজের হোসেন জানান, দেশের ব্যবসায়ীরা মৌসুম বুঝে ব্যবসা করে। তাই ঈদুল আজহা সামনে রেখে তারা পেঁয়াজের দাম বাড়াতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। ব্যবসায়ীদের কারসাজিতেই পেঁয়াজের পর্যাপ্ত আমদানি ও মজুদ থাকা সত্ত্বেও দাম নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা পণ্য মজুদ করছে। এ ছাড়া বাজারে সরকারের মনিটরিং ব্যবস্থাও নেই। টিসিবি একসময় বাজার নিয়ন্ত্রণের কিছু উদ্যোগ নিলেও বর্তমানে একেবারেই নেই।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এক মাস আগে দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ছিল ২২ থেকে ২৫ টাকা। এ সময়ের মধ্যে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে ৫৬.৩৩ শতাংশ। আর আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৫৯.৪৭ শতাংশ। এ ছাড়া গত এক সপ্তাহের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ৩৮ থেকে ৪৫ টাকায়। গতকাল সোমবার রাজধানীর শ্যামবাজার, কারওয়ান বাজার, শান্তিনগর ও ফকিরাপুল বাজার ঘুরে দেখা যায়, দেশি পেঁয়াজ মানভেদে বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা দরে। ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে।

দেশে পেঁয়াজের চাহিদা ২২ লাখ টন। এর মধ্যে দেশে উৎপাদিত হয় ১৯ লাখ টনের মতো, বাকি চাহিদা মেটানো হয় আমদানি করেই। আমদানি করা পেঁয়াজের বেশির ভাগই আসে ভারত থেকে। আর ঈদুল আজহার সময় পেঁয়াজের চাহিদা বাড়ার কারণে প্রতিবছরই ঈদের আগে আমদানি করা পেঁয়াজ নিয়ে বাজারে অস্থিরতা শুরু হয়। কিন্তু এ সমস্যা সমাধান করতে স্থায়ী কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় না।

দৈনিকদেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :আগস্ট ৮, ২০১৭ ১০:১৮ পূর্বাহ্ণ