আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা দাবি করেছিল, করাচিতে দাউদের মরণাপন্ন অবস্থা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছিল, নোট বাতিলের পরে ভারতে তার জাল নোট পাচারের কারবার ধাক্কা খেয়েছে। তাই পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের কাছে তার গুরুত্ব কমে গিয়েছে।
কিন্তু এখন দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারাই স্বীকার করে নিচ্ছেন, মাদক পাচার থেকে জাল নোট কারবারে এখনও সমানভাবে সক্রিয় দাউদ ইব্রাহিমের নেটওয়ার্ক। সম্প্রতি গুজরাট উপকূলের কাছে এম ভি হেনরি জাহাজ থেকে মাদক উদ্ধার কিংবা রাজধানী থেকে জাল টাকার পাচারকারী এক ব্যক্তির গ্রেফতার, সব জায়গায় দাউদের হাত দেখতে পাচ্ছেন গোয়েন্দারা।
জুন মাসে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে নরেন্দ্র মোদী বিস্তারিতভাবে জানিয়ে আসেন কীভাবে দাউদ এখনও গোটা উপমহাদেশে সন্ত্রাস ও মাদকের কারবার চালিয়ে যাচ্ছে। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পরে সন্ত্রাস মদদ দেওয়ার অভিযোগে মার্কিন প্রশাসন পাকিস্তানের উপর চাপ বাড়িয়েছে।
কিন্তু ভারতীয় গোয়েন্দাদের মতে, এ দেশে দাউদ যে কতটা সক্রিয় তা এম ভি হেনরি জাহাজ থেকে ১৫০০ কেজি হেরোইন উদ্ধার হওয়া থেকেই স্পষ্ট। গুজরাট উপকূলের কাছে আটক হওয়া ব্যক্তিকে ওই জাহাজের ক্যাপ্টেন ও তার সহকর্মীরা জেরা করে জানিয়েছে, ইরানের চাবাহার বন্দর থেকে দুবাই ঘুরে জাহাজটি করাচি আসে। সেখানে ঠায় পরিকল্পনাহীনভাবে তিন দিন দাঁড়িয়ে ছিল জাহাজটি। কেন সেখানে জাহাজটি ছিল তার কোনও স্পষ্ট জবাব নেই আটক ব্যক্তির কাছেও।
আটক ব্যক্তি জানিয়েছে, ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার আগে করাচি ছাড়াও সংলগ্ন গদর বন্দরেও গিয়েছিল জাহাজটি। গোয়েন্দারা নিশ্চিত যে, করাচি থেকেই মাদক জাহাজে তোলা হয়েছিল। জাহাজটিকে ভারতীয় নৌসেনারা পোরবন্দরে নিয়ে যান।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওই জাহাজের আসল গন্তব্যস্থল ছিল গুজরাটের আলঙ্গ বন্দর। গুজরাটে পুরনো জাহাজ ভেঙে ফেলার জন্য ওই বন্দরটির বিশেষ নাম রয়েছে। গোয়েন্দারা বলেন, ‘আলঙ্গে জাহাজ ভেঙে ফেলার ব্যবসায় লগ্নি রয়েছে দাউদের ঘনিষ্ঠ অনেক ব্যবসায়ীর। এ ক্ষেত্রে মাদকের পরিমাণ দেখে গোয়েন্দারা নিশ্চিত যে, ১৫০০ কেজি মাদক কোনও বিশ্বস্ত জাহাজ ব্যবসায়ীর মাধ্যমে গুজরাটে ঢোকাতে চেয়েছিল দাউদ। যদিও তার আগেই গ্রেফতার হয়ে যায় পাচারকারীর একজন।’
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ