২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | দুপুর ১:২৮

ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি ফেরত দিলেন শৃঙ্খলাবিধি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশ করতে আপিল বিভাগ যে সুপারিশ দিয়েছিল তার বিপরীত একটি খসড়া আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আদালতে জমা দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। মাসদার হোসেন মামলার শুনানিকালে রোববার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চে অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশ্যে এসব ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ্য করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘মিস্টার অ্যাটর্নি জেনারেল, আসেন আমরা এ বিষয়টি নিয়ে বসি।’ পরে আদালত আগামী রোববার থেকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে যেকোনো দিন গেজেট চূড়ান্ত করতে বসার জন্য দিন নির্ধারণ করেন। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, ‘আগামী রোববার থেকে বৃহস্পতিবার নির্ধারিত এ সময়ের মধ্যে বেলা ২টার পর যেকোনো সময় আপনারা আসেন। আমরা আপলি বিভাগের সব বিচারপতি আপনাদের সঙ্গে বসব।’

প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, ‘আইনমন্ত্রী, আইন মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ কেউ,   অ্যাটর্নি জেনারেল মিলে আপনারা আসেন আমরা বসব।’ এর আগে সকালে অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালার খসড়া গ্রহণ না করে তা ফিরিয়ে দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ।

গত ২৭ জুলাই প্রধান বিচারপতির সঙ্গে এক বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার কাছে ওই বিধিমালার খসড়া হস্তান্তর করেছিলেন।

পরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আজকে আমি বিধিমালার খসড়া প্রধান বিচারপতির কাছে হস্তান্তর করেছি। এটি এখন তিনি দেখবেন। পরে তা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর এটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে।’ এ ছাড়াও ২০ জুলাই প্রধান বিচারপতির সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ওই বৈঠকের পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে সরকার।

১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেন মামলায় ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেওয়া হয়। ওই রায়ের আলোকে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল। ১২ দফার মধ্যে ইতোমধ্যে কয়েক দফা বাস্তবায়ন করেছে সরকার। এ জন্য বারবার আদেশ দিতে হয়েছে আপিল বিভাগকে। এমনকি ২০০৪ সালে আদালত অবমাননার মামলাও করতে হয়েছে বাদীপক্ষকে। এরপর ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক ঘোষণা করে।

এ অবস্থায় ২০১৫ সালের ১৫ মার্চ আপিল বিভাগ চার সপ্তাহ সময় দেন সরকারকে। এরপর গত বছরের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় থেকে একটি খসড়া শৃঙ্খলাবিধি তৈরি করে সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো হয়। কিন্তু তা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের আলোকে না হওয়ায় সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃপক্ষ একটি কমিটি গঠন করে আলাদা একটি শৃঙ্খলাবিধি তৈরি করেন। গত ২ জানুয়ারি এ বিষয়ে আপিল বিভাগে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ২০০৭ সালের ১০ জানুয়ারি আপিল বিভাগ বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ সংক্রান্ত চারটি বিধিমালা সাত দিনের মধ্যে গেজেট আকারে প্রকাশের নির্দেশ দেন।

দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ

প্রকাশ :জুলাই ৩০, ২০১৭ ১২:৩২ অপরাহ্ণ