নিজস্ব প্রতিবেদক:
অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের গ্রেফতারে শিগগির অভিযানে নামবে পুলিশ। এসব নাগরিকরা মানবপাচার, প্রতারণার মাধ্যমে অর্থপাচারসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টায় এক সংবাদ সম্মেলন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
৪ বিদেশি নাগরিক, ৯ জন প্রতারক ও মানবপাচারকারী গ্রেফতার বিষয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। আব্দুল বাতেন বলেন, আমাদের দেশে অনেক বিদেশি নাগরিক অবৈধ ভাবে বসবাস করছে। এদের মধ্যে আফ্রিকা অঞ্চলের অধিবাসী নাগরিকরা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত।
এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে গোয়েন্দা (উত্তর) বিভাগের ক্যান্টনমেন্ট জোন অভিযান চালিয়ে ৪ নাইজেরিয়ানসহ ৭ প্রতারককে গ্রেফতার করেছে।
এরা হলেন— জন আগাড়ি ইউজিও, আফেজ, মাইকেল ইউজিনি ব্রাউন, নামডি কেলভিন, লিজা আক্তার ওরফে অ্যাসতা, তাসমিয়া পারভীন ওরফে শিমু ও মো. মহসিন শেখ।
আব্দুল বাতেন বলেন, গ্রেফতার লিজা বাংলাদেশি নাগরিক। তিনি নাইজেরিয়ানদের সাথে থাকেন। আগে একজনের সাথে লিভ টুগেদার করতেন। সেখানে তার একটা সন্তানও রয়েছে। ওই নাইজেরিয়ান বাংলাদেশ থেকে চলে গেলে এখন তিনি আরেক নাইজেরিয়ান ইউজিওর সাথে লিভটুগেদার করেন। তাসমিয়া পারভীন ওরফে শিমু ও মো. মহসিন শেখ লিজার এদেশীয় সহযোগী।
তদন্ত করে এ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে এই লিজা ও মহসিনের নামে ১২ টি ব্যাংক হিসাবের সন্ধান পাওয়া গেছে। সেখানে প্রায় দেড় কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এসব টাকা অসাধু মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ীদের যোগসাজশে পাকিস্তানি নাগরিক দানেশ রিজভীর নিকট প্রেরণ করেছে বলে জানান তিনি।
এই প্রতারক চক্র কিভাবে মানুষকে ফাঁদে ফেলে সে প্রসঙ্গে আব্দুল বাতেন বলেন, মো. কামরুজ্জামান নামে এক ভিকটিমের প্রিসকা খালিফা নামে এক কথিত বিদেশি নাগরিকের সাথে পরিচয় হয়। সেই সূত্রে ওই কথিত বিদেশি নারী কামরুজ্জামানকে জানান তার বাবার নামে লন্ডনের একটি ব্যাংক হিসাবে ৩ দশমিক ৮ মিলিয়ন ইউএস ডলার জমা আছে। কিন্তু ওই টাকা উত্তোলন করার জন্য একজন বিশ্বস্থ লোক প্রয়োজন।
তিনি জানান, এভাবে দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠার এক পর্যায়ে ওই বিদেশি নারী জানান, টাকাগুলো উত্তোলনের জন্য কিছু প্রসেসিং খরচ লাগবে। এভাবে তাকে ফাঁদে ফেলে একাধিক ব্যাংক হিসেবের মাধ্যমে ২৫ লাখ ৪৪ হাজার ১৪৪ টাকা হাতিয়ে নেয়। একই ভাবে মো. শাহনুর হোসেন (৫৭) নামে আরেক ভিকটিম থেকে ৪০ লাখ ৩৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
গ্রেফতার মাইকেল ও নামডির স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে আব্দুল বাতেন বলেন, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ গার্মেন্টস ব্যবসার আড়ালে বাংলাদেশি ও বিদেশি নাগরিকের পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণামূলকভাবে বাংলাদেশি বিভিন্ন লোকজনের নাম ও একাউন্ড ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করে আসছিলেন।
অপর এক অভিযানের কথা উল্লেখ করে আব্দুল বাতেন বলেন, বিদেশে চাকরি দেওয়ার নামে বিদেশে নিয়ে জিম্মি করে টাকা আদায় করার অভিযোগে দুজনক গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা হলেন— মো. জামাল হোসেন ও মো. মজিবুর রহমান।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ