২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১:১৪

আগস্টে দেশে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা : পানিসম্পদ মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক:

পানিসম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশে প্রকৃত বন্যা বলতে যা বোঝায় সেটি এখনও হয়নি। এ বছরের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে- আগামী আগস্ট মাসে দেশে বড় ধরনের বন্যা হতে পারে। সেই আশঙ্কা আমাদের আছে। বেশিরভাগ নদীর পানি বিপদসীমার নিচে থাকলেও আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহে বড় বন্যার আশঙ্কা করে তা মোকাবেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও জেলা প্রশাসনকে সতর্ক থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বন্যার আগে বাঁধগুলো মেরামত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল (আজ বুধবার) সকাল সাড়ে ১২টায় সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) সম্মেলনের দ্বিতীয়দিনের তৃতীয় অধিবেশন শুরু হয়। অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন পানিসম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। অধিবেশন শেষে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পানিসম্পদ মন্ত্রী তার এ আশঙ্কার কথা বলেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের সভাপতিত্বে সব বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এই কার্যঅধিবেশনে অংশ নেন।
ব্যারিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, প্রকৃত বন্যা বলতে যা বোঝায় সেটি এখনও আমাদের দেশে হয়নি। যখন পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা নদীর পানি এক সঙ্গে বাড়ে তখনই প্রকৃত বন্যা হয়। তবে বন্যা হয়েছে ভারতে, সেখানে মানুষ মারা গেছে। কিন্তু আমাদের দেশে এমন দুঃখজনক ঘটনা ঘটেনি। তিনি বলেন, বেশিরভাগ নদীর পানি বিপদসীমার নিচে আছে। জলাবদ্ধতা আর বন্যার পার্থক্য কিন্তু আপনাদের বুঝতে হবে। সাধারণত বড় বন্যা হয় যখন যমুনার পানি, পদ্মার পানি এবং মেঘনার পানি এক সাথে বাড়ে। সাথে যদি সাগরে তখন অমাবস্যা থাকে, তখন বন্যার প্রকোপ হয়। এবার ইতোমধ্যে দ্বিগুণ বৃষ্টি হয়েছে। সেজন্য আমরা একটা ওয়ার্নিং দিয়ে রাখছি যে (বড় বন্যার) একটা সম্ভাবনা আছে।
ডিসিদের কী নির্দেশনা দিয়েছেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পানিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, ডিসিরা বন্যার বিষয়ে কোনও কথা বলেননি। তারা নদী ভাঙন রোধ নিয়ে আলোচনা করেছেন। আমরা তাদের বলেছি, এখন থেকে মন্ত্রণালয়ের যে বরাদ্দ থাকে তার অর্ধেক ব্যয় করবো নদী শাসন কাজে। এ কাজ করতে ডিসিদের কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুতের নির্দেশ দিয়েছি। এছাড়া পানি নেমে গেলে বাঁধ সংরক্ষণ করতে ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছি। ডিসিরা নদী ভাঙন নিয়ে কথা বলেছেন জানিয়ে আনিসুল ইসলাম বলেন, নদী ভাঙবেই, নদীর একটা জিনিস আমরা বুঝতে চাই না, নদীগুলোর ক্যাচমেন্ট এরিয়ার ৯৩ ভাগ কিন্তু বাংলাদেশের বাইরে। তিনি বলেন, এখন দেশের বিভিন্ন এলাকায় যে পানি বেড়েছে তা মূলত বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার পানি। আমাদের দেশে সাধারণত বন্যা হয় আগস্ট মাসের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে। কিন্তু এবার যেটা হয়েছে তা মূলত বৃষ্টি ও অতিবৃষ্টির ফল। ইতোমধ্যে অন্য বছরের তুলনায় ২/৩ গুণ বৃষ্টি হয়েছে। সে কারণে অনেক জায়গায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।
আনিসুল ইসলাম বলেন, বন্যা অর্থ যেটা আমরা বোঝাই, সেই বন্যা কিন্তু এখনও কোথাও হয়েছে বলে আমার জানা নেই। যেটা হচ্ছে সেটা হচ্ছে বাঁধের বাইরের জায়গা যেগুলো আছে সেগুলো এবং এই জায়গাগুলো কিন্তু রাখা হয়েছে নদীর পানি প্রবাহের জন্যই। বন্যা হয়েছে যমুনার যে চরগুলো আছে সেখানে, বন্যা এখন হচ্ছে চট্টগ্রামের দিকে। তিনি বলেন, ভাঙনের যে সমস্যাগুলো আছে সেগুলো আমরা দেখছি। ভাঙন প্রতিরোধ করা খুব ব্যয়সাদ্ধ বিষয়। যে রিসোর্স আছে সেই রিসোর্সের মধ্যে করার চেষ্টা করছি। আমরা বিভিন্ন জায়গায় প্রকল্প নিয়েছি। এর সঙ্গে খনন ও ড্রেজিং যোগ করেছি। আগামীতে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মোট বাজেটের অর্ধেক অর্থ ড্রেজিংয়ের জন্য ব্যয় করা হবে বলেও জানান তিনি।

দৈনিক দেশজনতা/এন আর

 

প্রকাশ :জুলাই ২৬, ২০১৭ ৬:২২ অপরাহ্ণ