নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঝুম বৃষ্টি থামার লক্ষণ নেই। থেমে নেই জলের ভোগান্তিও। যে পরিমাণ বৃষ্টি হচ্ছে তা নিষ্কাষণের ব্যবস্থা নেই রাজধানীতে। এর ফল জলজট। রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি নিয়ে এসেছে দুর্যোগ। রাজধানীর উঁচু-নিচু এলাকা বলে কোনো পার্থক্য নেই আর। এই পানি মানে না কোনো বাধা। সচিবালয়, সুপ্রিম কোর্ট থেকে শুরু করে রাজপথ, ঘর বাড়ি সব ডুবিয়ে দিয়েছে রাত থেকে চলা টানা বৃষ্টি।
পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে রীতিমত সচিবালয়ে কাজ করতে হয়েছে ফায়ার সার্ভিসকে। তারা সেচে পানি সরিয়েছে প্রশাসনের কার্যক্রমের প্রাণবিন্দু থেকে।
নতুন ঢাকা-পুরান ঢাকার কোনো পার্থক্য নেই এখন। সব এলাকা ডুবিয়ে দিয়েছে বৃষ্টি। ধানমন্ডি ২৭, পুরান ঢাকার আর কে মিশন রোড,খিলগাঁও, রাজারবাগ, মালিবাগ, রামপুরা, বংশাল, দনিয়া, ধোলাইখাল, খিলক্ষেত এলাকার কোথাও হাঁটু, কোথাও বা তার চেয়ে বেশি পানি জমে আছে। ভিআইপি রোড হিসেবে পরিচিত কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউয়েরও সড়কের এক প্রান্তে জমেছে পানি।
এই অবস্থায় সকালে অফিসগামী মানুষ পড়েছে ভোগান্তিতে। স্কুলগামী শিশুদের ভোগান্তির তো কোনো শেষই নেই। কাকভেজা হয়ে কেউ কেউ গিয়েছে গন্তব্যে।
এই পরিস্থিতিতে সকাল থেকে কোথাও রাজপথ একেবারে ফাঁকা, কোথাও বা দীর্ঘ যানজট। কোনো কোনো সড়ক ডুবে গেছে পুরোপুরি, কোনো কোনো সড়কের একাংশে জমে থাকা পানির জন্য সেটুকু রাস্তা এগিয়ে চলছে যানবাহন। কারণ, কোথাও গর্ত থাকলে ফেঁসে যেতে পারে চাকা। ফলে সড়কের বাকি অংশে তৈরি হয়েছে গাড়ির দীর্ঘ সারি।
এমনিতেই নগরীতে প্রয়োজনের তুলনায় গণপরিবহন কম। তার ওপর বের হতে না পারায় অনেক যানবাহন আছে বসে। ফলে গন্তব্যে যেতে দীর্ঘ সময়েও বাহন পাচ্ছেন না নগরবাসী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা পরিচিতজনদের কাছে জানতে চাইছেন কোন এলাকার পরিস্থিতি কেমন। আর ফেসবুক জুড়ে কেবল বিভিন্ন এলাকার সড়কে পানি জমে থাকার ছবি। পাশাপাশি নগর কর্তৃপক্ষের প্রতি ক্ষোভ জানাচ্ছে তারা।
স্বাভাবিক কর্মদিবসেও অনেক স্কুলে ক্লাস চলছে না। সরকারি-বেসরকারি অফিসেও উপস্থিতি কম। সেবা গ্রহণে আসা মানুষও কম আসছে বহুলাংশে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আরিফ হোসেন জানান, আজ সকাল থেকে ঢাকায় বৃষ্টির পরিমাণ বেশি। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ৫৬ মিলিমিটার।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের থেকে বুধবার সকাল নয়টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘন্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য মতে, আগামী ৭২ ঘন্টায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ