নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশে প্রতি বছর ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকার গ্রীস্ম কালীন ফল ‘ মাস মিলন’ আমদানী করা হয়। যার পুরোটাই আসে তাইওয়ান, থাইল্যান্ড এবং ইন্ডিয়া থেকে। গত কয়েক বছর পরীক্ষা নিরীক্ষার পর চুয়াডাঙ্গার সবজিগ্রাম খ্যাত গাড়াবাড়িয়া গ্রামে এ চাষ প্রথম শুরু হয়েছে। এগ্রি কনসার্ন নামে একটি প্রতিষ্ঠান ১২ বিঘা জমিতে ‘ মাস মিলন’ আবাদে সফলতা পেয়েছে। ইতিমধ্যে বাজারজাত শুরু হয়েছে। উচ্চ ফলনশীল নতুন এই ফল চাষ আবাদে খরচের তুলনায় অধিক লাভ হওয়ায় আগ্রহী হয়ে উঠেছে স্থানীয় কৃষকরা।
মাস মিলন গ্রীস্ম কালীন ফল হলে বছরে ৩ বার চাষ করা যায়। মার্চ থেকে নভেম্বর মাস মিলন চাষের উপযোগী সময়। বীজ বপন থেকে উত্তোলন পর্যন্ত এ আবাদে সময় লাঘে দুই মাস। ১ বিঘা জমি চাষে ৬০ গ্রাম বীজ লাগে। এ বীজ পাতু দেওয়ার পর ১৬-১৭শ চারা জন্মায়। এই চারাগুলো মালচিং পদ্ধতির মাধ্যমে জমিতে লাগানো হয়। পচনের হাত থেকে রক্ষা পেতে গাছ বড় হলে বিশেষ ব্যবস্থায় তৈরী মাচায় তুলে দেয়া হয়। ফলগুলো মাচার নিচে ঝুলতে থাকে। কীটনাশক বিহীন এ ফল বিঘা প্রতি উৎপাদন হয় ৫৫-৬০ মন। দেখতে অনেকটা বাঙ্গী ফলের মত। বাঙ্গী ফল তেমন একটি মিষ্টি হয় না। আর মিলন ফল বেশ মিষ্টি।
চুয়াডাঙ্গা শহরতলীর গাড়াবাড়িয়া গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা মিলর মাস মিলনের ক্ষেত। মাচাঁয় ঝুলছে ফল। জমি থেকে ফল সংগ্রহ করে কাটুনজাত করে পাঠানো হচ্ছে ঢাকা ও চট্রগ্রামে। দ্বিতীয় দফায় চাষ করার জন্য আবারও জমি প্রস্তুতে নেমে পড়েছে প্রতিষ্টানটি। তাদের দেখাদেখি গ্রামের অন্য কৃষকরাও আগ্রহী হয়ে উঠেছে মাস মিলন চাষে।
এগ্রি কনসার্নের ম্যানেজার কৃষিবিদ খাইরুল ইসলাম বলেন, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড এবং ইন্ডিয়া থেকে মাস মিলন ফলটি আমাদানী করা হয়। গ্রীস্ম কালীন এই ফলের বাজার সাধারণত রাজধানী ঢাকা, চট্রগ্রাম , সিলেটসহ দেশের আর্ন্তজাতিক মানের হোটেল রেস্তোরা ও বড় বড় ফাস্ট ফুডের দোকান। এর স্থানীয় বাজার মূল্য বেশ চড়া। প্রতিটি ফলের ওজন হয় দেড় থেকে দুই কেজি। বর্তমানে প্রতি কেজির মূল্য ১৮০-২০০ টাকা। এক বিঘা চাষে খরচ হয় ৬০-৭০ হাজার টাকা। খরচ বাদে লাভ হয় ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তালহা জুবাইর মাশরুর বলেন, বিদেশ থেকে আমদানীকৃত এ ফলটির দেশে ব্যপক চাহিদা রয়েছে। চুয়াডাঙ্গায় প্রথমবারের মত এ চাষটি হওয়ায় কৃষক পর্যায়ে আগ্রহ দেখা দিয়েছে। ফলটি যদি সঠিকভাবে বাজারজাত করা যায় কৃষকরা ব্যাপক লাভবান হবে। ফলে অনেকাংশে দেশীয় মুদ্রা সাশ্রয় হবে।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ