নিজস্ব প্রতিবেদক:
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের আরাম-আয়েশি জীবন-যাপন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যরা। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের গাড়ি, ফ্ল্যাট থাকলেও সংগঠনটির বেশিরভাগ নেতারই অবস্থা করুণ। জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করেই তাদের টিকে থাকতে হচ্ছে। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভ ছিল নেতাকর্মীদের মধ্যে। বুধবার দুপুরে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভায় অনেক নেতার এনেিয় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
জানা গেছে, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সায়েম খান সভায় তার আক্ষেপ প্রকাশ করেন। তিনি কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে উদ্দেশ করে বলেন, আপনারা নেতা হওয়ার পরেই দামি ফ্ল্যাট, গাড়ি, ড্রাইভার ব্যবহার করছেন। রাতারাতি পরিবর্তনÑ এ টাকার উৎস কী? আর আমরা যা ছিলাম, তাই রয়ে গেছি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আপনারা বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে টাকা-পয়সা নেন। এ সময় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন প্রমাণ চান। তখন সায়েম খান বলেন, সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল টাওয়ার ভবনের ঠিকাদারের কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা নিয়েছেন আপনারা। এ সময় সভায় ব্যাপক হট্টগোল সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে থামিয়ে দেওয়া হয় সায়েম খানকে।
ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক হোসাইন বলেন, আগামী ২৬ জুলাই আপনাদের কমিটির মেয়াদ শেষ। সম্মেলন কবে দেবেন? আর নির্ধারিত সময়ে সম্মেলন না দিলে গঠনতন্ত্র সংশোধন করেন। এই প্রশ্নের জবাবে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা আপার (শেখ হাসিনা) সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি চূড়ান্ত করব। এ সময় ফারুক হোসাইন বলেন, আপনাদের সঙ্গে আমরাও কথা বলতে যাব। আমাদের মনের কথাও ব্যক্ত করতে চাই। সভায় উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকেই এ মতকে সমর্থন করেন।
সভায় বিবাহিত ছাত্রলীগ নেতাদের সংগঠন থেকে বহিষ্কারের দাবি ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতা আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিবাহিতদের ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করতে অনুরোধ করেন।
তবে জানা যায়, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি, বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা কমিটির উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নেতাই বিবাহিত। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রে চাকরিজীবীদের সংগঠন করার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বিষয়টি নিয়ে কোনো কথা উঠেনি। সম্প্রতি উল্লেখযোগ্যসংখ্যক চাকরিজীবীকে বিভিন্ন পদে নিয়োগ দিয়েছেন সোহাগ ও জাকির।
বর্ধিতসভায় অনেক নেতাই অভিযোগ করেন, বিভিন্ন জেলা-উপজেলা কমিটি গঠনের সময় দায়িত্বরত নেতাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয় না। এমনকি কেন্দ্রীয় নেতাদের নিজ নিজ জেলায় কমিটি দেওয়ার সময়ও কোনো মন্তব্য নেওয়া হয় না।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ