নিজস্ব প্রতিবেদক:
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া জানিয়েছেন, ১৩ জেলার ৪৫ উপজেলায় বন্যার কারণে সাড়ে ৬ লাখ লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মঙ্গলবার সচিবালয়ে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।মন্ত্রী জানান, ভারী বৃষ্টির কারণে আগামী কয়েক দিনে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে।
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘সিলেট, মৌলভীবাজার, কক্সবাজার, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ জেলা বন্যা কবলিত হয়েছে। উত্তরের পানি মধ্যাঞ্চলে নেমে আসলে আরো নতুন জেলা প্লাবিত হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন প্রতি জেলার ক্ষয়ক্ষতি, ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম, আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিত মানুষের পরিস্থিতি নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখছি। ১১ জুলাই পর্যন্ত বন্যা পরিস্থিতির ৯০টি পর্যবেক্ষণ পয়েন্টের মধ্যে ১২টির পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, ৫৫টি পয়েন্টে পানি বেড়েছে।’
ত্রাণমন্ত্রী আরো বলেন, ‘উজানের দেশ চীন, ভারত, নেপাল ও ভূটানে এবার বন্যা হয়েছে। ভাটির দেশ হিসেবে উজানের প্রভাব আমাদের উপর পড়বে। এর আলোকে আমরা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা করছি ও মানুষের জন্য সহনশীল অবস্থায় রাখতে সক্ষম হয়েছি।’
মায়া বলেন, ‘গত ৩ থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত বন্যা কবলিত ১৩ জেলায় ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ৪ হাজার মেট্রিক টন চাল, এক কোটি নয় লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ এবং নয় ধরণের খাবারের সমন্বয়ে সাড়ে ১৮ হাজার ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’
বন্যা দুর্গত এলাকায় যারা খোলা আকাশের নিচে, উঁচু বাধে বা রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন তাদের অতি দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিলে খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করছি।’
যেকোনো দুর্যোগ পরিস্থিতিতে ত্রাণ কার্যক্রম চালানোর মতো পর্যাপ্ত খাদ্য সরকারের কাছে মজুদ রয়েছে বলেও দাবি করেন মায়া।
তিনি বলেন, ‘জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানাব তারা যেন বন্যা প্লাবিত এলাকার টিউবওয়েলগুলো উচু করে দিয়ে এবং পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ান।’
বৃহস্পতিবার থেকে উত্তরাঞ্চলের বন্যা কবলিত প্রত্যেকটি এলাকা সফর করে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কথা শুনবেন এবং তাদের সমস্যা সমাধান করবেন বলেও জানান মন্ত্রী। এ সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. শাহ কামাল উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ