নিজস্ব প্রতিবেদক:
তিস্তা নদীতে ভারতের গজলডোবা ব্যারেজের অধিকাংশ গেট খুলে দেয়ায় সিরাজগঞ্জে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। ফলে যমুনা নদীর পানি বেড়েই চলেছে। গত ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ৩-৪ দিন যমুনা নদীতে আরো পানি বৃদ্ধি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। এছাড়া করতোয়া, হুরাসাগর, ফুলজোড়, ইছামতি নদীতেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
ভারি বর্ষণ, পাহাড়ি ঢল ও নদীভাঙনের কারণে জেলার কাজিপুর, শাহজাদপুর, চৌহালী, বেলকুচি ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ৪৮টি ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। সেই সাথে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। পানি বাড়ার কারণে আমন ধান ও পাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নদী তীরবর্তী এলাকায় ফসলী জমি পানিতে ডুবে গেছে। বন্যা কবলিত মানুষ বাড়ি-ঘর ছেড়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। শাহজাদপুর উপজেলায় খামারীরা গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। অধিকাংশ বাথানগুলো বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে বানবাসীরা। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কাটা ওয়াপদা এলাকার আমেনা বেগম বলেন, বাড়ি-ঘর পানিতে ডুবে গেছে। থাকার জায়গা নাই। ছেলে মেয়ে নাই। অন্যের বাড়ি বাড়ি সাহায্য তুলে কোন মতে দিন কাটছে। সরকারি ভাবে এখনও কিছুই পায়নি।সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নবীদুল ইসলাম বলেন, সয়দাবাদে বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রত্যেক পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে চাউল ও শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়। সোমবার দুপুরে সয়দাবাদ ইউনিয়নে বন্যাদুর্গত ১৫০টি পরিবারের মাঝে এই ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দীকা।সিরাজগঞ্জ কাজিপুর উপজেলার শুভগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান খোকা বলেন, রাস্তা ঘাট থেকে শুরু করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সব পানির নিচে তলিয়ে গেছে। তাতে পরিবহন ব্যবস্থা ধ্বংস। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। বন্যা কবলিত ৪শ পরিবারকে ইতিমধ্যে ত্রান সামগ্রী পৌছে দেয়া হয়েছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানান, বন্যা কবলিত মানুষের জন্য ২০ মে.টন চাল ও নগদ ১লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক এগুলো বিতরন করছেন।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ