নিজস্ব প্রতিবেদক:
ফরিদপুরের ভাঙ্গা মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী হীরামনি তিশার আত্মহত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। শনিবার সকালে বিদ্যালয়ের সামনে শত শত শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সচেতন মহল এই মানববন্ধনে অংশ নেয়।
ঘণ্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- ভাঙ্গা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক একরাম হোসেন, সহকারী শিক্ষক মাওলানা সেলিম, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন সাজু, তানজিল আহম্মেদ মুন্সি, ওসমান গনি আকাশ, তারিকুল ইসলাম তারেক, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সোহাগসহ আরো অনেকে।
এ সময় বক্তারা মেধাবী ছাত্রী হীরামনির মৃত্যুর জন্য দায়ী শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ ও তার স্ত্রী মাহামুদা বেগমকে দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবি করেন। তারা আরো বলেন, পুলিশ প্রশাসন যদি আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেফতার না করে তাহলে সামনে আরো কঠোর আন্দোলন করা হবে। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল করে।
এদিকে ভাঙ্গা মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে অভিযুক্ত শিক্ষক আবুল কালাম আজাদকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। বিষয়টি বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ নিশ্চিত করেছেন।
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মিরাজ হোসেন বলেন, শিক্ষার্থী হীরামনির স্বজনেরা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করার পর থেকেই পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে। আমরা আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যেই আসামিদের আটক করতে পুলিশ সক্ষম হবে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মেধাবী শিক্ষার্থী হীরামনি নিজ ঘরে আত্মহত্যা করেন। পুলিশ শুক্রবার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। আত্মহত্যার কারণ হিসেবে স্থানীয়, সহপাঠী ও পুলিশের ভাষ্য মতে, শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ হীরামনিকে অনেক আগে থেকেই যৌন হয়রানী করতো, প্রেমের প্রস্তাব দিত। সম্প্রতি হীরা বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হলে ওই বিভাগের শিক্ষক হিসেবে শিক্ষক আজাদ সুযোগ পেয়ে যায়। নানা প্রলোভন ও ভয় প্রদর্শন করে হীরা মনিকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। এই বিষয়টিতে শিক্ষক আজাদের স্ত্রী হীরা মনিকে পরকীয়া ও বাজে মেয়ের অপবাদ দিয়ে এলাকায় প্রচার করে। বৃহস্পতিবার হীরাদের বাড়িতে এসে সবার সামনে হীরাকে স্বামীর সাথে পরকীয়া প্রেমের দায়ী করে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ ও চরিত্রহীনার অপবাদ দেয়। বিষয়টি সইতে না পেরে ওই দিন রাতেই ঘরের ফ্যানের সাথে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে মেধাবী ছাত্রী হীরা।
পরে শিক্ষার্থীর স্বজনেরা ভাঙ্গা থানায় আবুল কালাম আজাদ ও তার স্ত্রী মাহমুদাকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ